Image description

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঋণ পরিশোধের জন্য বাংলাদেশকে বাড়তি সময় দিয়েছে রাশিয়া। একইসঙ্গে বিলম্বিত কিস্তির কারণে ১৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার জরিমানা মওকুফ করেছে দেশটি।  

বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডির) সংশ্লিষ্ট ইউরোপ উইংয়ের  প্রধান ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। 

জানা গেছে,  ২০২৭ সালের মার্চ থেকে প্রকল্পের ঋণের আসল ও সুদ পরিশোধ শুরু করার কথা ছিল বাংলাদেশের। মস্কো ঢাকার অনুরোধে সাড়া দিয়ে মূল পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ১১.৩৮ বিলিয়ন ডলারের রাশিয়ান রাষ্ট্রীয় ঋণের মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়েছে এবং পরিশোধ শুরুর সময় ১.৫ বছর পিছিয়ে দিয়েছে। এছাড়া, প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য নেওয়া ৫০ কোটি ডলারের ঋণের কিস্তি যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ১৬ কোটি ৪০ লাখ ডলারের যে জরিমানা হয়েছিল, তা  মওকুফ করেছে রাশিয়া।

ইআরডি সূত্র জানিয়েছে,  মস্কো থেকে পাঠানো সংশোধিত প্রটোকলের একটি খসড়া অনুযায়ী এখন মার্কিন ডলারের পাশাপাশি রাশিয়ান রুবলেও ঋণ পরিশোধ করা যাবে। পূর্বে, ঋণ পরিশোধ এক মাস বিলম্বিত হলে বাংলাদেশকে ৪.৫ শতাংশ হারে জরিমানা দিতে হতো। ১৫ মার্চ ২০২২ থেকে ১৫ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত সময়ে সম্ভাব্যতা অধ্যয়নের ঋণের কিস্তি বকেয়া থাকলে বাংলাদেশকে প্রায় ১৬৪.১৭ মিলিয়ন ডলার জরিমানা গুনতে হতো। তবে সংশোধিত প্রটোকলে উল্লেখ করা হয়েছে, এই অর্থ বাংলাদেশকে পরিশোধ করতে হবে না। কারণ সংশ্লিষ্ট বিধানগুলো প্রস্তাবিত চুক্তি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

ইআরডি সূত্র আরও জানায়, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরই কিছু ঋণদাতা সংস্থা এবং দেশের কাছে ঋণ পরিশোধে বাড়তি সময় চাওয়া হয়। ঋণের সুদের হারেও ছাড় চাওয়া হয়। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ রূপপুর প্রকল্পের ঋণ চুক্তি সংশোধনে রাজি হন। ওই বৈঠকেই সংশোধনী চূড়ান্ত করার বিষয়ে একমত হয় সরকার এবং রোসাটম। 

ইআরডি কর্মকর্তারা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, অর্থপ্রদানে বিলম্বের জন্য বাংলাদেশ দায়ী নয়, কারণ তহবিল সোনালী ব্যাংকে রোসাটমের অ্যাকাউন্টে জমা করা হলেও ইউক্রেন যুদ্ধের পর রাশিয়ান ব্যাংকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে তা স্থানান্তর সম্ভব হয়নি। 

এ বিষয়ে ইআরডির সংশ্লিষ্ট ইউরোপ উইংয়ের  প্রধান ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে সরকারের যোগাযোগের ভিত্তিতে এমন ভালো সিদ্ধান্ত এসেছে। প্রকল্পের কাজ এখনও বেশ বাকি থাকায় আরও দুই বছর মেয়াদ বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। রাশিয়ার তাতে সম্মতি রয়েছে।

তিনি আরও জানান, প্রকল্প শুরুর আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য নেওয়া ঋণের কিস্তির অর্থ আলাদা একটি ব্যাংক হিসাবে জমা রাখা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে ডলারে তা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। বিকল্প প্রক্রিয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে এখনও  কোনো সমাধানে আসা যায়নি।