
নওগাঁ শহরে বাসায় ঢুকে আলিউজ্জামান পিও (২২) নামের তরুণকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ বুধবার দুপুর একটার দিকে শহরের কেডির মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত তরুণকে উদ্ধার করে প্রথমে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আলিউজ্জামান রাজশাহী বঙ্গবন্ধু কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। তাঁর বাবা আতিকুর রহমান পেশায় চালকল ব্যবসায়ী। তিনি দাবি করেন, আলিউজ্জামান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সংগঠক ছিলেন। এ কারণে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীরা তাঁর ছেলেকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। হুমকিদাতারাই এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আতিকুর রহমান পরিবার নিয়ে ৯ বছর ধরে শহরের কেডির মোড় এলাকায় চারতলা ভবনের তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। তিনি নওগাঁ পৌরসভার পার-নওগাঁ সরদারপাড়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা।
আহত তরুণের স্বজন, স্থানীয় বাসিন্দা ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আলিউজ্জামান আজ দুপুরে বাড়িতে একাই ছিলেন। বেলা একটার দিকে ২৫-৩০ তরুণ ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কোপাতে থাকে। এ সময় তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ওই বাসার তত্ত্বাবধায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, বেলা একটার দিকে ২৫-৩০ জন তরুণ জোর করে বাসার ভেতর ঢুকে পড়ে। তাদের সবার বয়স ১৭ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। তিনতলায় আতিক সাহেবের বাসায় ঢুকে তাঁর ছেলেকে কুপিয়ে জখম করে চলে যায়। আশপাশের লোকজন আসার আগেই পালিয়ে যায়।
নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আবু জার গাফফার বলেন, বেলা ১টা ৪০ মিনিটের দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় আলিউজ্জমানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার মাথা, পাঁজর ও বুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর আঘাত ছিল। জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।
আহত তরুণের বাবা আতিকুর রহমান দাবি করে বলেন, ‘আমার ছেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সংগঠক ছিল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় ছাত্রলীগের কর্মীরা তাঁর ছেলেকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। তাঁদের ধারণা ছাত্রলীগের কর্মীরাই দিনদুপুরে বাসায় ঢুকে তাঁকে কুপিয়ে জখম করে গেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাজশাহী মেডিকেল কলেজে অপারেশনের (অস্ত্রোপচার) প্রস্তুতি চলছে। হামলাকারীদের কয়েকজনের পরিচয় জানা গেছে। এ ঘটনায় মামলা করব।'
নওগাঁয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো কমিটি নেই। জেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক হিসেবে পরিচিত ফজলে রাব্বী বলেন, আলিউজ্জামান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন কি না, এই মূর্হূতে তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।