Image description

Ali Ahmad Mabrur  (আলী আহমদ মাবরুর ) 

 
 
আমি জুলাই বিপ্লবের শহীদের ঘটনা নিয়মিতই পড়ি, এর মধ্যে কয়েকটি ঘটনা পড়তে গিয়েই প্রায়শই বুকটা হাহাকার করে ওঠে। পৈশাচিকতা কতটা কুৎসিত হতে পারে তা জানতে পেরে নিজেই নির্বাক হয়ে যাই।
 
৫ আগষ্ট হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের সব জায়গার মতো ঠাকুরগাঁওতেও মানুষ আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিলটি বালিয়াডাঙ্গি মোড়ে সাইদ কমিশনারের বাসার কাছাকাছি পৌঁছলে কমিশনার সাইদ মিছিলের নেতৃত্ব দেয়া কয়েকজনকে নিজের রুমে ডেকে পাঠায়।
 
বর্বর এই মানুষটি আগে থেকেই রুমে গ্যাস সিলিন্ডার ও পেট্রোল এনে জমিয়ে রেখেছিল। আন্দোলনকারীরা কয়েকজন রুমে এসে বসলে সাইদ কমিশনার তাদের সাথে একটু কথা বলেই নিজের সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে বেরিয়ে যায়। যাওয়ার সময় সে আগুন লাগিয়ে দেয়, মুহুর্তেই গ্যাস সিলিন্ডারটির বিস্ফোরন হয়। পুরো ঘরটি জলন্ত অগ্নিকুন্ডে পরিণত হয়।
 
আগুনে দগ্ধ হয়ে আন্দোলনকারীরা কাতরাতে থাকে। আগুনে পুড়ে মরে যাওয়ার চেয়ে কষ্ট আর কোনো মৃত্যুতে আছে কিনা জানি না। কিছু সময় পর স্থানীয় লোকজন সেখানে এসে অগ্নিদগ্ধদের উদ্ধার করে। জলদি হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু পথেই একজন মারা যায়। আরও একজন মারা যায় হাসপাতালে নেয়ার পর। আর ঢাকায় নিয়ে আসা হয় দুজনকে। তারা চার-পাঁচদিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত শহীদ হয়ে যান।
 
গুলি করে মানুষ হত্যার ঘটনা জুলাই বিপ্লবে অনেক হয়েছে। কিন্তু এভাবে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার ঘটনা আশুলিয়ায় কিছু ঘটেছে আর ঠাকুরগাঁওতেও এমনটা হয়েছে বলে জানলাম। সেই সাইদ কমিশনার এখন কোথায় আছেন জানিনা। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তাও জানা নেই। তবে আমি মনে করি, এই নরপশুকে ঠাকুরগাঁওসহ গোটা বাংলাদেশের মানুষের সামনে পরিচয় করিয়ে দেয়া দরকার। এখনো পর্যন্ত আমি এই বর্বর মানুষটিকে নিয়ে কোথাও তেমন আলোচনা দেখিনি।
 
ঠাকুরগাঁওতে বড়ো বড়ো জাতীয় নেতৃবৃন্দ আছেন। বিএনপির মির্জা ফখরুল সাহেব আছেন, জামায়াতের দেলোয়ার ভাই আছেন। আশা করি, এই বিষয়ে তারা অতি দ্রুত কার্যকর কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।