Image description

নোয়াখালী সরকারি কলেজে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে আয়োজিত বর্ষবরণ ও শোভাযাত্রায় এক নারী শিক্ষার্থীর লুঙ্গি পরা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কেউ কেউ বিষয়টিকে সাহসী সাংস্কৃতিক উপস্থাপনা বলে উল্লেখ করলেও, বেশিরভাগ প্রতিক্রিয়াই এসেছে সমালোচনামূলক ভাষায়।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকালে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়া শোভাযাত্রায় অংশ নেয়া ওই শিক্ষার্থী লুঙ্গি পরে একটি কুলা হাতে শোভাযাত্রার সামনের সারিতে হাঁটতে দেখা যায়। তার পরিহিত পোশাকের সঙ্গে ছিল বাংলা নববর্ষের লোগো সম্বলিত প্রতীকও। মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ছবিটি।

এরপর থেকেই ফেসবুকে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। সংবাদকর্মী ইয়াকুব নবী ইমন তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘শাড়িতে নারী ঠিক আছে, কিন্তু বোন তুমি আমাদের লুঙ্গি নিয়ে টানাটানি করছো কেন? এটা তো মানতে কষ্ট হচ্ছে।’ 

আরেকজন, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর রায়হান চৌধুরী ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, ‘এটা আমাদের নোয়াখালী সরকারি কলেজ! কোনো বৈষম্য সৃষ্টি করা যাবে না বলেই কি একজন নারীকে লুঙ্গি পরাতে হবে?’ — এ রকম অসংখ্য পোস্টে ফেসবুক যেন এক মুহূর্তেই ভরে যায়।

তবে এই ঘটনার পেছনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে কিছু মানবিক দৃষ্টিকোণও সামনে এসেছে। কলেজটির এক শিক্ষার্থী এবং নারী অধিকারকর্মী ফেসবুকে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাসে লেখেন, নোসকের প্রত্যেক শিক্ষার্থী আমাদের ভাইবোন। তাদের ভালোমন্দ দেখার দায়িত্ব আমাদের সবার। আজকে লুঙ্গি পরার যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য সবাই লজ্জিত।

তিনি আরও লেখেন, মেয়েটি ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে, কলেজের ভেতরে একেবারেই নতুন। সে বুঝতে পারেনি এর পরিণতি কী হতে পারে। এখন সে অত্যন্ত অনুতপ্ত, লজ্জিত এবং মানসিক ট্রমার মধ্যে আছে। শিক্ষক ও আশপাশের লোকজনের উৎসাহেই হয়তো এমনটা হয়েছে। আমরাও দায় এড়াতে পারি না। আমি যদি একটু আগে গিয়ে ওকে থামাতাম, তাহলে হয়তো আজ দেশজুড়ে মেয়েটিকে এত বড় ট্রলে পড়তে হতো না।

তার মতে, লুঙ্গি পড়াটা উচিত হয়নি, এটা আমরা মানছি। কিন্তু একবার ভাবুন তো, ওর অপরাধটা কি এত বড় যে সারা দেশের মানুষের কাছে তাকে লজ্জায় ডুবিয়ে দিতে হবে? আমাদের এই বোনটির দিকে তাকিয়ে দয়া করে এসব পোস্ট মুছে দিন।

যদিও কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।