
বাংলা নববর্ষ উদযাপন নিয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, জনগণের করের টাকা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ধর্মীয় মূল্যবোধ ধ্বংসের কাজে ব্যবহার করবেন না।
তিনি বলেন, প্রচলিত বাংলা নববর্ষ একটি সাংস্কৃতিক উৎসব, যার উৎপত্তি মূলত হিন্দু ধর্মীয় ও বৈষ্ণব ঐতিহ্যের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। নববর্ষের প্রচলিত আনুষ্ঠানিকতা যেমন পান্তা-ইলিশ ভোজন, মঙ্গল শোভাযাত্রা এবং বিভিন্ন লোকজ সংস্কৃতির অনুসরণ ইসলামী আকিদা ও আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
শনিবার রাজধানীর পল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে মামুনুল হক এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা, যা মুসলমানদেরকে তাদের প্রতিটি কাজে শরিয়তের সীমারেখা মেনে চলতে নির্দেশ দেয়। মহান আল্লাহ বলেন- ‘যে কেউ আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা লঙ্ঘন করে, সে নিশ্চয়ই নিজের ওপর জুলুম করে।’ (সূরা তালাক: ১)
মামনুল হক বলেন, বাংলা নববর্ষে যে ধরনের কর্মকাণ্ড অনুষ্ঠিত হয়- তা বহুক্ষেত্রে অনৈসলামিক, বিদআত ও অপচয়মূলক। বিশেষ করে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা, গান-বাজনা এবং অনৈসলামিক আচরণ প্রমোট করা ইসলামি নৈতিকতার পরিপন্থি।
তিনি বলেন, সরকারি উদ্যোগে এইসব উৎসব পালনের মাধ্যমে মুসলিম জনগণের করের অর্থ ব্যবহার করে এমন কার্যক্রমকে উৎসাহিত করা হচ্ছে, যা একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের পক্ষেও যথার্থ নয় এবং তা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের চরিত্রের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণও বটে।
মামুনুল হক বলেন, আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই— তারা যেন এই ধরনের ধর্ম ও সংস্কৃতিবিরোধী কর্মকাণ্ডে রাষ্ট্রীয় মদদ দেওয়া থেকে বিরত থাকে এবং মুসলিম জনসাধারণের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে।
বৈঠকে মাওলানা মামুনুল হক আজকের ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি সফল করায় দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সরকারের উদ্দেশে বলেন, অবিলম্বে গাজা গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোরালো ভূমিকা রাখুন।
সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদের পরিচালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে অংশগ্রহণ করেন সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, মাওলানা রেজাউল করীম জালালী, মাওলানা আফজালুর রহমান, সাবেক এমপি মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী, মাওলানা কুরবান আলী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা আব্দুল আজিজ, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, মুফতি শরাফত হোসাইনসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।