Image description
 

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ও যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি এবং তার আইনজীবীরা যেকোনো আনুষ্ঠানিক প্রশ্নের জবাব দিতে প্রস্তুত। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টিউলিপ বলেন, ‘বাংলাদেশে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পর্কে যেকোনো আনুষ্ঠানিক প্রশ্নের জবাব দিতে আমার আইনজীবীরা প্রস্তুত।’ তিনি সরাসরি নিজেকে নির্দোষ দাবি না করে বিষয়টি তার আইনজীবীদের ওপর ছেড়ে দেন।

বাংলাদেশি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার জন্য তিনি অনুতপ্ত কি নাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে টিউলিপ বলেন, ‘আপনি আমার আইনি চিঠিটি কেন দেখেন না এবং দেখেন না যে আমার কোনো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আছে কি না... (বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ) একবারও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি এবং আমি তাদের কাছ থেকে শোনার জন্য অপেক্ষা করছি।’

দুর্নীতির একাধিক তদন্তে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম আসার পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি যুক্তরাজ্যের ট্রেজারি মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার নেওয়া, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অভিযোগের মুখে তিনি ব্যাপক চাপের মধ্যে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি মন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি স্কাই নিউজকে বলেন, যুক্তরাজ্যের এই এমপির বাংলাদেশে বিপুল সম্পদ রয়েছে এবং তার জবাবদিহি করা উচিত। পরে টিউলিপের আইনজীবীরা দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) একটি চিঠি লেখেন, যেখানে অভিযোগগুলোকে ‘মিথ্যা ও বিরক্তিকর’ বলে আখ্যায়িত করা হয়।

ওই চিঠিতে বলা হয়, কোনো প্রশ্ন থাকলে দুদককে ২০২৫ সালের ২৫ মার্চের মধ্যে টিউলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। অন্যথায় ধরে নেওয়া হবে যে, উত্তর দেওয়ার জন্য বৈধ কোনো প্রশ্ন নেই।

টিউলিপ সিদ্দিক সম্প্রতি অনলাইনে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, (প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার) সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে এবং কর্তৃপক্ষ কোনো উত্তর দেয়নি। স্কাই নিউজ এ বিষয়ে বাংলাদেশের সরকারের প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগ করেছে।

ব্যাপক বিক্ষোভের পর গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন এবং তিনি দেশত্যাগ করেন। তার শাসনামলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গ্রেপ্তার, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল, যা তাকে আন্তর্জাতিক পরিসরে স্বৈরশাসকের তকমা এনে দেয়।