Image description
বাংলাদেশে প্রতি বছরই রমজানের শেষ দিকে কিছু বিতর্ক জোরাল হতে শুরু করে। তার অন্যতম চাঁদ দেখা ও ঈদের দিন নির্ধারণ। এবারও তেমন বিতর্কে নেমেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক ব্যবহারকারী। নিজেদের অবস্থানের পক্ষে নানা ধরনের যুক্তি তুলে ধরছেন।  

মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পালনে চাঁদ দেখার ব্যাপারে যেসব প্রশ্ন উঠে আসছে জ্যোতির্বিজ্ঞান ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে তার কয়েকটির উত্তর তুলে ধরা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।

 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশের কোনো কোনো ব্যবহারকারীকে প্রশ্ন করতে দেখা গেছে, ‘সৌদি আরবের পরদিন বাংলাদেশে ঈদ হলে, জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির কাজটা কী?’

এক্ষেত্রে প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশে কি সৌদি আরবের পরদিনই চাঁদ দেখা যাবে?

গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার সূর্যের হিসাবের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়ে থাকলেও হিজরি ক্যালেন্ডারে মাসের হিসাবটা হয় চাঁদের আবর্তনকে অনুসরণ করে।

ভৌগোলিকভাবে পশ্চিমে অবস্থিত হওয়ায় আরব বিশ্বে বাংলাদেশের তিন ঘণ্টা পর সূর্যাস্ত হয়। সেটা সূর্যের হিসাব। কিন্তু চাঁদের হিসাব অন্যরকম।

কারণ চাঁদ যে গতিতে পৃথিবীর চারদিকে পরিভ্রমণ করে, পুরো পৃথিবী ঘুরতে ২৯.৫ দিন লাগে।

আবার বাংলাদেশ থেকে পূর্বদিকের দেশগুলো সূর্য আগে দেখতে পেলেও পশ্চিমের দেশগুলো চাঁদ আগে দেখতে পায়।

ফলে সূর্যের হিসাবে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্য তিন ঘণ্টা হলেও চাঁদের হিসাবে সেটা ১৭ থেকে ২১ ঘণ্টার।

খালি চোখে চাঁদ দেখার মতো উপযোগী হতে চাঁদ ও সূর্যের মধ্যবর্তী কোণ পৃথিবী থেকে ১০.৫ ডিগ্রিতে থাকতে হবে। সেই অবস্থানে নতুন চাঁদের যেতেও এই সময় লাগে। ফলে নতুন চাঁদের জন্ম হলেও খালি চোখে বাংলাদেশ থেকে দেখা সম্ভব হয় না।

বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির সহসভাপতি মুনির হাসান বলেন, ‘নতুন চাঁদের জন্ম হওয়ার পরে সময়ের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে আকাশে তার উপস্থিতি বাড়তে থাকে।’

‘মঙ্গলবার বাংলাদেশের দিগন্ত রেখার ওপরে নতুন চাঁদের উদয় হয়েছিল বটে। কিন্তু এত কম অংশ আলোকিত ছিল যে খালি চোখে দেখা সম্ভব হয়নি,’ যোগ করেন তিনি।

অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, এর স্থায়িত্ব ছিল ১২ মিনিটের মতো। টেলিস্কোপ নিয়ে দিক, কোণ নির্ধারণ করে কেউ দেখতে চাইলে হয়তো দেখতে পেত, বলেন মুনির হাসান।

আবার সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশ থেকে এগিয়ে থাকা মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া আরব বিশ্বের মতো করেই ঈদ পালন করে। তাদের অনুসরণ করে আফ্রিকার কিছু মুসলিম দেশও। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপের মুসলমানরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিলিয়ে রোজা ঈদ পালন করে।

আবার অস্ট্রেলিয়ায় একটি অংশ সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ করলেও অন্য অংশটি চাঁদ দেখে ঈদ পালন করে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা