Image description

ইতিহাস ও ভূগোল ভারত-বাংলাদেশকে একে ওপরের বিশেষ প্রতিবেশী করে তুলেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় তারা কেবল দীর্ঘতম স্থল সীমানাই ভাগ করে না,  মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের উত্থানে ভারতের অবদান ইতিহাসে নজিরবিহীন একটি ঘটনা।  বিদ্রূপাত্মকভাবে সেই ইতিহাস এবং ভূগোলই  উভয় পক্ষের মধ্যে এখন আতঙ্ক ও ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উভয় দেশের সংলগ্ন সীমানায়  মানুষ ও পণ্যের অবৈধ আন্তঃসীমান্ত চলাচল  দ্বিপাক্ষিক সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) -এর  বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রায়ই রাতের বেলা সীমান্ত পারাপারের সময় তারা বাংলাদেশি বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করছে। বাংলাদেশের জন্ম দ্বি-জাতি তত্ত্বকে ভুল প্রমাণ করে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে অসম দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কারণে মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকাকে প্রায়শই প্রশ্নবিদ্ধ করে বাংলাদেশ। 

 
 

১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশে হঠাৎ রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে এটি হয়েছিল। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিভিন্ন স্তরে বিস্তৃতি লাভ করেছে, কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে  সম্পর্ক আরো তীক্ষ্ণ হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন শেখ হাসিনা সরকার ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসে ১৫ বছর ধরে শাসন চালানোর পর তার কর্তৃত্ব হারায়।

 হাসিনার শাসনামলের প্রথম দশকে বাংলাদেশ ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেখে। কিন্তু পরবর্তীতে একতরফা নির্বাচন, রাজনৈতিক ভিন্নমতের প্রতি অসহিষ্ণুতা, ক্রমবর্ধমান দুর্নীতি এবং অন্যান্য বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে অস্থিরতা বেড়েছে। এতে  শুধু হাসিনার রাজনৈতিক খ্যাতিই ক্ষুণ্ন হয়নি বরং অনেকেই তার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে । বিশেষ করে তরুণরা, যাদের মধ্যে অনেকেরই প্রথমবার  ভোট দেয়ার আকাঙ্ক্ষা  থাকলেও তারা নিজেদের পছন্দমতো ভোট দিতে পারেননি। এক্ষেত্রে  হাসিনার  সাথে ভারতের সমঝোতা  ছিল বাংলাদেশিদের মতামতের পূর্বনির্ধারিত উপসংহার।

২০২৪ সালের জুলাই মাসে পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নেয়। চাকরিতে কোটা সিস্টেম  নিয়ে ছাত্রদের বিক্ষোভ দেশব্যাপী  প্রতিবাদে পরিণত হয়।  চাপে পড়ে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হন হাসিনা। এরপর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। গোটা জাতি যখন তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন ক্ষোভ দেখেছিলো , তখন ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে এবং  ভারত সরকারের মধ্যেও  ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দেয়।

সূত্র : ইন্ডিয়াস ওয়ার্ল্ড