
বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সাবেক সভাপতি ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জ্যেষ্ঠ পাইলট ক্যাপ্টেন মাহবুব দীর্ঘ লড়াইয়ের পর চাকরিতে পুনর্বহাল হয়েছেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স তার চাকরির পূর্ণ মেয়াদ ও জ্যেষ্ঠতার স্বীকৃতি প্রদান করেছে, যা ন্যায়বিচারের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ক্যাপ্টেন মাহবুবের প্রতিক্রিয়া চাকরিতে পুনর্বহাল হওয়ার পর ক্যাপ্টেন মাহবুব আমার দেশকে বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে এই অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আজ বিমানের এই সিদ্ধান্ত ন্যায়বিচারের পথে একটি বড় অগ্রগতি। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোর্ড ও কর্তৃপক্ষকে তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জানায়। এটি শুধু আমার জন্য নয়, বরং শ্রম আইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও পুরো বিমান শিল্পের জন্য একটি দৃষ্টান্ত।
তিনি বলেন,‘আমার চাকরি পুনর্বহালকে যদি কোনো অর্জন হিসেবে দেখা হয়, তবে আমি বিনম্রচিত্তে এই অর্জন দেশের গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের জন্য জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জীবন উৎসর্গকারী সকল যোদ্ধা ও শহীদদের প্রতি উৎসর্গ করছি।’
ন্যায়বিচারের বিজয় দীর্ঘদিন নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা সত্ত্বেও ক্যাপ্টেন মাহবুব রাজনৈতিক প্রভাব, আওয়ামী সরকারের ভিন্ন মতাদর্শী ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের শিকার হয়ে ২০২১ সালে বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সময়ে কোন ধরনের কারণ দর্শানো ছাড়াই চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন। দুঃখজনক হলেও সত্যি, বেতন বৈষম্যের বিরুদ্ধে তার বৈধ আন্দোলনের পর সংস্থার অন্য সকল পাইলটকে পাওনা বেতন পরিশোধ করা হলেও তাকে সেদিন চাকরিচ্যুত করা হয়, যা শ্রম আইন ও সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ছিল।
এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে গেছেন। অবশেষে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স অনুধাবন করে তার চাকরি পুনর্বহাল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা শ্রম অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা)-র বর্তমান কার্যকরী পরিষদের প্রতিক্রিয়া:
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোর্ড ও কর্তৃপক্ষকে আমরা এই ন্যায়সংগত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে, ক্যাপ্টেন মাহবুবকে এতটাই নির্মমভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল যে, সেদিন পাইলটদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া হলেও তাকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়। বিলম্বে হলেও তাকে পুনর্বহাল করাকে সাধুবাদ জানাই। আমরা আশা করি, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স তার চাকরিচ্যুতি সময়কালের বকেয়া বেতন পরিশোধ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে এবং তার টার্মিনেশন সময়কালের সম্পূর্ণ বকেয়া বেতন পরিশোধের মাধ্যমে প্রকৃত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে। ন্যায়বিচারের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত শুধু একজন পাইলটের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, ক্যাপ্টেন মাহবুবের পুনর্বহাল এভিয়েশন খাতে ন্যায় ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার এক গুরুত্বপূর্ণ নজির হয়ে থাকবে।