
সংযুক্ত আরব আমিরাতের আজমান এলাকায় নিহত প্রবাসী শাওনের গ্রামের বাড়িতে চলছে মাতম। পরিবারের স্বজনহারাদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে এলাকার পরিবেশ। নিহত শাওন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের ছোট কুড়িপাইকা গ্রামের মো. আউয়াল মিয়ার ছোট ছেলে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টার দিকে তেলবাহী জাহাজের ট্যাঙ্কার পরিষ্কার করতে গিয়ে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় শাওনের সঙ্গে আরও দুই বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস এসে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার দিকে মৃত্যুর খবর তার বড় ভাই সৌরভ পরিবারকে জানায়।
এদিকে দুর্ঘটনার নিজ সন্তানের মৃত্যুর খবর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলে শুরু হয় মাতম। নিহতের মায়ের গগনবিদারী কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে এলাকার পরিবেশ।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দুই বছর আগে জীবিকার তাগিদে আরব আমিরাতে পাড়ি জমায় শাওন। নিহত শাওন ও তার বড় ভাই সৌরভ একই কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। এরই মধ্যে শাওন দেশে এসে দুই মাস আগে ১ মাস ১০ দিন ছুটি কাটিয়ে নিজ কর্মস্থলে ফিরে যান।
নিহত শাওনের বাবা মো. আওয়াল মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলে শাওন দুই বছর আগে চাকরি নিয়ে আরব আমিরাতের আজমানে যায়। দুই বছর পর কিছুদিন আগে ১ মাস ১০ দিনের ছুটিতে দেশে আসেন। ফের কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ায় আজ ২ মাস হলো। প্রতিদিনের মতো সে তার কর্মস্থলে জাহাজে তেলের ট্যাঙ্কি পরিষ্কার করতে যায়। এ সময় সঙ্গে থাকা তার বন্ধু মটর নিয়ে আগে ভেতরে প্রবেশ করে। কিছু সময় অতিবাহিত হলেও সে ওপরে উঠে না আসায় শাওনসহ অন্য আরও দুজন ভেতরে প্রবেশ করে। এ অবস্থায় অক্সিজেনের সংকটে অচেতন হয়ে পড়েন।
পরে ফায়ার সার্ভিস এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে আমার শাওনের মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে শাওনের চাচা জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, সে আমার ভাতিজা হলেও আমার ছেলের চেয়ে কম নয়। তার এমন মৃত্যু আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী কালু বলেন, আরব আমিরাতে শাওনের মৃত্যুর সংবাদ শুনে আমি তাৎক্ষণিক তাদের পরিবারের খোঁজখবর নিয়েছি। শাওন ছেলেটি এলাকায় সবার সঙ্গে আন্তরিক ছিল। সে বিদেশে গিয়েও সবার খোঁজখবর নিত। সে অত্যন্ত ভালো ছিল। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।