
অকালেই নিভে গেল মাগুরার সেই নির্যাতিত শিশুর জীবনপ্রদীপ। চিকিৎসকদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা যায় আছিয়া (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। এ ঘটনায় আসামিদের বিচারের দাবিতে উপযুক্ত শাস্তি চেয়ে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। নেটিজেনদের পাশাপাশি তারকারাও আসামিদের বিচারের দাবি জানিয়েছে। তারাও অপরাধীদের ফাঁসি চেয়েছেন।
দেশ বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা আছিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বেহেশতের ফুল “আছিয়া” বেহেশতে চলে গেছে আলহামদুলিল্লাহ।’
চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া হৃদয় ভাঙার ইমোজি পোস্ট করে শুধু লিখেছেন, ‘আছিয়া।’
চিত্রনায়িকা ববি লিখেছেন, ‘আমরা বাকরূদ্ধ ও বিক্ষুব্ধ! আমরা আছিয়ার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী ও লজ্জিত! দ্রুততম সময়ের মধ্যে আছিয়ার ধর্ষকদের, আছিয়ার খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। আছিয়া ধর্ষকদের ১ সেকেন্ড ও বেঁচে থাকার আধিকার নাই।’
অভিনেতা রওনক হাসান লিখেছেন, ‘আছিয়া মরিয়া প্রমাণ করিল সে মরে নাই! সে বাঁচিয়াছে! আর আমাদের মারিয়া গিয়াছে।’
অভিনেতা ইরফান সাজ্জাদ সৃষ্টিকর্তার কাছে বিচার দিয়ে লিখেছেন, ‘আল্লাহ আপনি বিচার কইরেন।’
অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি লিখেছেন, ‘এ শহরে আর কোনো কন্যার জন্ম না হোক। মাতৃহীন,ভগ্নিহীন,কন্যাহীন মরুভূমি হোক এদেশ। কুলাংগারের আবাদ হোক!’
তমা মির্জা প্রশ্ন তুলেছেন, ধর্ষক কেন বেঁচে থাকবে? তার কথায়, ‘শোনেন, পশু ধরে রেখে দেয় না মেরে ফেলে, আবর্জনা পরিষ্কার করে ফেলতে হয়; রেখে দিয়ে, দুর্গন্ধ ছড়াতে হয় না। দশ/বিশজন পশুরূপী অমানুষ না থাকলে আমাদের দেশের জনসংখ্যা কমবে না। ধর্ষক কেন বেঁচে থাকবে? হয় সঙ্গে সঙ্গে মারেন, না পারলে সাধারণ জনগণের কাছে দিয়ে দেন, কিন্তু বাঁচিয়ে রেখেন না।’
অভিনেতা ফারহান আহমেদ জোভান লিখেছেন, ‘আমাদের মাফ করে দিও আছিয়া। আমরা তোমাকে বাঁচাতে পারলাম না।’
আছিয়াকে নিয়ে লিখেছেন সংগীতশিল্পী ও অভিনেত্রী পারশা মাহজাবীন। তার কথায়, ‘মরে গিয়ে বেঁচে গেল।’
নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী লিখেছেন, ‘মরে আছিয়া বেঁচে গেল। আর বুঝিয়ে দিয়ে গেল অনেক কিছুই। আছিয়া, তীব্র কষ্ট পেয়েছ মা, এবার ঘুমাও। লজ্জিত, ক্ষমার অযোগ্য আমরা।
উল্লেখ্য, গত ৬ মার্চ মাগুরা শহরে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। পরের দিন তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
এরপর শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সংকটাপন্ন শিশুটিকে গেল শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিআইসিইউ) থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরদিন রোববার শিশুটিকে সিএমএইচে পেডিয়াট্রিক আইসিইউতে নেওয়া হয়।
ধর্ষণের ওই ঘটনায় শিশুটির বোনের শ্বশুর, শ্বাশুড়ি, দুলাভাই ও দেবরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে চার আসামিকে হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতিও পেয়েছে পুলিশ।