
আমার দেশ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে গোপালগেঞ্জর সেই ভয়ংকর এসিল্যান্ড প্রতীক দত্তকে।
গত রবিবার (১০ মার্চ) আমার দেশ পত্রিকার শেষের পাতায় ‘ছাত্রলীগের ক্যাডার থেকে ভয়ংকর এসিল্যান্ড’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয়।
গত সোমবার (১১ মার্চ) ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের কার্যাল সিনিয়র সহকারী কমিশনার মেহেদী হাসান কাউছার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে কোটাীপাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রতীক দত্তকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজোর সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে বদলী করা হয়েছে।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে প্রতীখ দত্ত (১৯০১৯) কে ১৩ মার্চ অপরাহ্নে বর্তমান কর্মস্থল হতে তাৎক্ষণিকভাবে অবমুক্ত (Stand Released) করা হলো।
প্রতীক দত্ত বুয়েটে ছাত্রাবস্থায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দুর্ধর্ষ ক্যাডার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বুয়েটের অনেক ছাত্র তার হাতে নির্যাতনের শিকার হয়। রেহাই পায়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও।
বুয়েটের ছাত্র তানজিল রহমানকে নির্যাতনের ঘটনায় প্রতীক দত্তসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার শাহবাগ থানায় ফৌজদারি মামলা দায়ের করেন তানজিল রহমানের বাবা আলমগীর সিকদার।
প্রতীক দত্তের বদলীর আদেশের বিষয়ে মামলাটির বাদী আলমগীল সিকদার আমর দেশকে বলেন, প্রতীক দত্তকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে আইনের আওতায় না এনে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বদলি কেরে বরং পুরস্কৃত করা হয়েছে। আমি অতিদ্রুত তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর বিচারের দাবি জানাই। এমন দৃষ্টান্তমূলক বিচার করা হোক শিক্ষাঙ্গনে যেন নতুন কোন প্রতীক দত্তের জন্ম না হয়।
উল্লেখ্য, প্রতীক দত্ত ৩৮তম বিসিএসে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মজীবনে পা রাখেন। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে বয়োজ্যেষ্ঠ এক ব্যবসায়ীর মুখে ‘হোল্ড অন’ শুনে ক্ষেপে যান তিনি। এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী নিন্দার ঝড় ওঠে।
এরপর তিনি ২০২৪ সালের ২৩ মে কোটালীপাড়া উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগ দেন।
কোটালীপাড়ায় যোগ দিয়েই দুর্নীতি ও অনিয়মের বেপরোয়া কাণ্ডারি হয়ে ওঠেন প্রতীক। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে জমির নামজারি, মিসকেস ও মিউটেশনের ক্ষেত্রে নিজের পছন্দের লোকদের পক্ষে রায় দেন। বিভিন্ন ব্যক্তিকে অবৈধভাবে চাপ দিয়ে নিজের অফিস রুমে এসি, গাড়ির শেড, লোহার গেটসহ বিভিন্ন সুবিধা উপঢৌকন গ্রহণ করেছেন তিনি।
গত ১৭ ডিসেম্বর দুপুরে কোটালীপাড়ার কুশলা ইউনিয়নের জামিলা গ্রামে একটি নির্মাণাধীন ব্রিজের অ্যাপ্রোচ সড়কে মাটি দেওয়াকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে প্রতীক প্রকাশ্যে ঠিকাদার আব্দুস সামাদের গালে চড় মারেন। ঘটনাটি সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হলে পুরো কোটালীপাড়ায় নিন্দার ঝড় ওঠে।