
চলতি মার্চ মাসেই মেয়াদোত্তীর্ণ হচ্ছে প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের ৪২ হাজার পিস লোসাটিয়াম পটাশিয়াম ৫০ মি. গ্রা. ট্যাবলেট। অক্টোবরে মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২ লাখ ৩২ হাজার টাকা (বিক্রীত মূল্য) মূল্যের ১৯ হাজার ৪০০ পিস ক্লোপিডোগ্রেল বাইসালফেট অ্যান্ড অ্যাসপিরিন (নোক্লগ প্লাস) ট্যাবলেটের। আর ইনজেকশন ইপ্রাট্রোপিয়াম ব্রোমাইড ০.৫ মি. অ্যান্ড সালবিউটামল ২.৫ মি. (ইপ্রাসল) ২৫ হাজার পিসের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী নভেম্বরে। এসব ইনজেকশনের বিক্রয় মূল্য ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ঠিক এভাবেই খুলনার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন স্টোরে মেয়াদোত্তীর্ণের ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় ১৪ লাখ টাকার ৮ ধরনের ট্যাবলেট-ইনজেকশন। নাগরিক নেতাদের অভিযোগ, চিকিৎসক সিন্ডিকেটের কারণে প্রয়োজনহীন ওষুধ কেনায় ব্যয় করা হচ্ছে মূল্যবান অর্থ। আবার চিকিৎসক-ওষুধ কোম্পানি সিন্ডিকেটে হাসপাতালে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও বাইরের ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনতে বাধ্য করা হয় রোগীদের। জানা যায়, গত ৫ ফেব্রুয়ারি খুমেক হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ড মেয়াদোত্তীর্ণ ঝুঁকিতে থাকা ৮ ধরনের ওষুধের তালিকা করেছে। হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মোস্তফা কামাল জানান, হার্টের চিকিৎসায় কার্যকরী ইনজেকশন এনোক্সাপারিন ৬০ মি. গ্রা. ও ৮০ মিলি গ্রামের চাহিদা দেওয়া হলেও প্রতি বছর ৪০ মিলি গ্রামের ইনজেকশন কেনা হয়। এবারও গত বছর কেনা প্রায় সাড়ে ৭০০ এনোক্সাপারিন ৪০ মিলি গ্রামের দামি ইনজেকশন স্টোরে পড়ে আছে। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের পুরোনো প্রশাসন যেসব ওষুধ কিনেছে তার মধ্যে প্রায় ৪২ হাজার লোসাটিয়াম পটাসিয়াম ট্যাবলেট মেয়াদোত্তীর্ণ ঝুঁকিতে পড়েছে। আউটডোরে প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী চিকিৎসা নেয়। সেখানে এ ওষুধ ব্যবহার করা হলে সরকারি অর্থের অপচয় হতো না।
জানা যায়, হাসপাতালের সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক ডা. আক্তারুজ্জামানের দায়িত্ব পালনকালে কয়েক চিকিৎসকদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। অভিযোগ রয়েছে, ওই সময় বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির সঙ্গে যোগসাজশে হাসপাতালে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও সেসব ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে রোগীদের বাধ্য করা হতো। এতে রোগীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এদিকে, হাসপাতালের মেডিসিন স্টোর কিপার অশোক কুমার হালদার জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কেনা ৮ ধরনের ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ ঝুঁকিতে থাকায় তালিকা করে প্রয়োজনে অন্য স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে হস্তান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. মোহসীন আলী ফরাজী জানান, কীভাবে এত বিপুল পরিমাণ ওষুধ স্টোরে পড়ে আছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।