
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বদরুল আলম হিম্মত (৩২) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার (৫ মার্চ) রাত ৮টার দিকে উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের মগটুলা গ্রাম থেকে হিম্মতের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি ওই গ্রামের হাসিম উদ্দিনের ছেলে।
গত রবিবার ভোর রাত ৪ টা ১৩ মিনিটের দিকে হিম্মত তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসে তিনি তার বাবা-মা ও দুই ভাইয়ের ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখেন- ‘এই মানুষগুলো আমাকে মৃত্যুর চেয়ে ভয়ংকর মানসিক যন্ত্রণা দিয়ে সুসাইড করতে বাধ্য করেছে। বিশেষ করে আমার দুই ভাই। ভেবে নিয়েছি ২য় রমজানে আমি পৃথিবী থেকে বিদায় নিবো। সত্যি বলতে বেকারত্বের যন্ত্রণা যে কতটা ভয়ংকর, তা যে বেকার সেই বোঝে। হয়তো আমাকে কবর দিয়ে সবাই ভুলে যাবে। কিন্তু আমাকে মেরে ফেলা মানুষ তোমাদের সাথে হাশরের ময়দানে দেখা হবে। সে পর্যন্ত দোয়া করি ভালো থেকো।’ পরে একইদিন সন্ধ্যা ৬ টা ৩৯ মিনিটের দিকে হিম্মত ঘুমের ট্যাবলেটের ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখেন- ‘আল্লাহ তুমি আমাকে মাফ করে দিও।’
এ বিষয়ে নিহতের বড় ভাই সারোয়ার আলম (৩৭) বলেন, ‘আমরা কেউ বাড়িতে ছিলাম না। আমি চাকরির সুবাদে কেন্দুয়া থাকি। বিগত ২০ দিন ধরে আমার বাবা ঢাকার আব্দুল্লাহপুরে ক্যান্সারের চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় আমার চাচাতো ভাই মোখলেসুর রহমান ইফতারের জন্য হিম্মতকে ডাকাডাকি করলেও সে যায়নি। এদিন রাতে আমার মা হিম্মতের মোবাইল নম্বরে ১০-১২ টা কল দিলেও সে রিসিভ করেনি। সে অনেক বছর ধরে মাদকাসক্ত। ৪ বার রিহ্যাবেও পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সংশোধন হয়নি। তাকে আমরা অনেকবার ব্যবসার জন্য টাকা-পয়সা দিয়েছি। তবে সে ব্যবসার টাকা নষ্ট করেছে মাদকের পিছনে। কিন্তু সে এমন সিদ্ধান্ত নেবে আমরা বুঝতেই পারিনি।’
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও অন্য আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।