Image description

নীলফামারীর সৈয়দপুরে বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে অতিথি হিসেবে এক মঞ্চে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করলেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

একটি সরকারি কলেজের অনুষ্ঠানে গণঅভ্যুত্থানে পতিত সরকারের দোসরদের সাথে একই মঞ্চে জেলার সর্বোচ্চ সরকারি কর্মকর্তার দীর্ঘ চার ঘণ্টা পাশাপাশি অবস্থান করা নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় চলছে শহরজুড়ে।

জেলা প্রশাসক বলেছেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জেনেও যদি আওয়ামী লীগ নেতাকে দাওয়াত করেন, তার করণীয় নেই। কেননা তিনি তাকে চেনেন না।

আর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে নয়, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাবেক অধ্যক্ষ হিসেবে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমানকে অতিথি করা হয়।

শনিবার (১ মার্চ) সৈয়দপুর সরকারি কলেজে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। বেলা সাড়ে ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নুর ই আলম সিদ্দিকী। তাদের পাশেই এক কতারে অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং সৈয়দপুর কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান।

এ দৃশ্য দেখে উপস্থিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সহযোদ্ধারা, বিভিন্ন শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক, সুধীজন কানাঘুষা করলেও প্রথম দিকে কেউ মুখ ফুটে কিছু বলেনি। কিন্তু মধ্যাহ্নভোজের সময় এ নিয়ে কথা ওঠে এবং কয়েকজন সংবাদকর্মী ও শিক্ষার্থী অধ্যক্ষ গোলজার হোসেনের খাবারের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন। এতে বিষয়টি ডিসি ও ইউএনওর কানে গেলেও তারা গুরুত্ব না দিয়ে ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে পাশে নিয়েই পুরস্কার বিতরণ করেন।

এদিকে অনুষ্ঠানের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় শুরু হয়। কথা উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতাদের কৌশলে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে কি না।

সৈয়দপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গোলজার হোসেন বলেন, ‘তিনি আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে নয়, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাবেক অধ্যক্ষ হিসেবে এসেছেন। এই কলেজ সরকারিকরণে তার ব্যাপক অবদান ছিল। তার সময়ই মূলত আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে দাবি তুলে সফল হয়েছি। তাই কৃতজ্ঞতা স্বরূপ সৌজন্যতাবশত তাকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানপ্রধান যদি জেনেও আওয়ামী লীগ নেতাকে দাওয়াত দেয় তাহলে আমাদের কী করার আছে! আমি তো জানি না কে আওয়ামী লীগ আর কে অন্য দলের নেতা। আগে জানতে পারলে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া যেত। এখন কোনো ধরনের অসৌজন্য প্রকাশ ঠিক হবে না।‘ এ কথা বলে তিনি মাত্র একজনের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।