
দেশের সব শ্রেণির মানুষের খাদ্যের জোগানদাতা কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম না পেয়ে দিন দিন নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। ধান-পাট-গম-সবজিসহ নানা ধরনের ফল, ফসলের চাষ করে অধিকাংশ সময় উৎপাদন খরচই তুলতে পারছেন না। এ অবস্থায় বাড়ছে কোল্ডস্টোরেজের ভাড়া। বস্তাপ্রতি ২৫০ টাকা ভাড়া বেড়ে ৩০০ টাকা হচ্ছে। ফলে কৃষক প্রান্তিক থেকে আরও প্রান্তিক হয়ে পড়ছেন। দেহের মতোই জীর্ণ হয়ে পড়ছে তার বসতবাড়ি। দাদাল ফড়িয়া, পাইকার, সিন্ডিকেট এবং করপোরেট চক্রে পড়ে দিশেহারা কৃষক। মোটাতাজা হচ্ছে এসব মধ্যস্বত্বভোগী চক্র। দেশে কৃষিপণ্যের বাণিজ্যিকীকরণ ঘটছে। কিন্তু কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি। ফসল চাষ করে দাদন ও মহাজনী ঋণের বোঝায় খোয়াচ্ছেন জমি-জিরাত। উচ্চমূল্যে জমি চাষ, শ্রমিকের মজুরি, বীজ, সার, কীটনাশক কিনতে গিয়ে ঋণের জালে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যাচ্ছে অসহায় কৃষক। এসব করে অনেকেই পথে বসেছেন। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে কৃষির উৎপাদন ব্যাপক বাড়লেও সুষ্ঠু বিপণন, পরিবহণ ও সংরক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় জিম্মি হয়ে পড়ছেন চাষিরা। তারা ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না।
এ বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ইমদাদ উল্লাহ মিয়ান যুগান্তরকে বলেন, সরকার বিভিন্ন ফসলের ওপর নগদ সহায়তা বা প্রণোদনা হিসাবে বীজ, সারসহ কৃষি উপকরণ দিচ্ছে। আগামী দিনে ঢালাওভাবে প্রণোদনা দেওয়া হবে না। যে এলাকায় যে ফসল ভালো হয় ওই এলাকায় ওই ফসলে প্রণোদনা দেওয়া হবে। আবার কোনো ফসলের জাতীয় চাহিদা কত তা নিরূপণ করে বেশি উৎপাদনে নিরুৎসাহিত করা হবে। যে এলাকায় যে ফসল কম উৎপাদন হচ্ছে ওই এলাকায় ওই ফসল উৎপাদনে প্রণোদনা দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, কিছু ভ্রাম্যমাণ কোল্ডস্টোরেজ তৈরি করা হবে। একেবারে ফসলের মাঠ থেকে কৃষকরা স্টোরেজে ফসল রাখার সুযোগ পাবে। তখন আর এ ধরনের খারাপ পরিস্থিতিতে পড়তে হবে না।
সচিব বলেন, গত বছর হঠাৎ করে দেশে আলুর দাম প্রায় চারগুণ বেড়েছিল। অধিক লাভের আশায় এ বছর কৃষকরা আলু এবং পেঁয়াজ ফসল বেশি করেছেন। আবার কোল্ডস্টোরেজ সুবিধাও দেওয়ার মতো অবকাঠামো গড়ে ওঠেনি। ফলে কৃষকরা উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণের সুবিধা পাচ্ছে না। সরকার সীমিত সামর্থ্যরে মধ্যে চেষ্টা করছে। কিছু কোল্ডস্টোরেজ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। শুরুতে সরকার পাইলটিং করবে, পরে জাতীয়ভাবে কোল্ডস্টোরেজ স্থাপনের চেষ্টা করা হবে।
সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানী ঢাকা বা অন্য কোনো শহরে যে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজি, তা তৃণমূলের একজন কৃষক বিক্রি করছেন ৩-৪ টাকা কেজিতে। যে ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা, তা কৃষক বিক্রি করছেন ২-৩ টাকা করে। অর্থাৎ রাজধানীতে প্রায় ১০ গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু কৃষক শরীরের ঘাম ঝরিয়ে, অর্থ ব্যয় করে উৎপাদন করে দিন শেষে লোকসান গুনে ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়ছেন। বাজারে নেওয়ার পরিবহণ ভাড়া না ওঠায় খেত থেকে বাঁধাকপি তুলে ফেলে দিচ্ছেন কিংবা গরুর খাবার হিসাবে ব্যবহার করছেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গোমরা গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদির খাঁচাভর্তি বেগুন সন্ধ্যাকুড়া সেতু থেকে মহারশি নদীতে ফেলে দিয়েছেন। দাম যখন অতিরিক্ত চড়া থাকে শহরের বাজারে, তখনো কৃষকরা তেমন কিছু পান না। রাজশাহীর এক কৃষক বলেন, দাম বাড়লে ভোক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কিন্তু কৃষক ফসলের দাম না পেয়ে লোকসানে-লোকসানে নিঃস্ব হলেও তার পক্ষে কথা বলার কেউ নেই। কৃষকের পাশে কেউ দাঁড়ায় না। শেরপুর, রাজশাহী, বগুড়া, চট্টগ্রাম, সিলেট, মুন্সীগঞ্জ ও যশোরের বাজার ঘুরে, কৃষক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
করপোরেট প্রতিষ্ঠানের কাছে অসহায় উত্তরাঞ্চলের কৃষক : উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের তিন কোটি ৮০ লাখ ৫৭ হাজার জনসংখ্যার প্রায় ৮০ ভাগ এখনো পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। দেশের মোট কৃষিপণ্যের ২৯ ভাগের জোগান আসে উত্তরের কৃষি থেকে। কিন্তু যে কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলান তাদের ভাগ্যের বিশেষ বদল হয়নি। এবার আলু ও বিভিন্ন আগাম সবজি চাষ করে কৃষকরা পথে বসেছেন।
রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষিতে ক্রমবর্ধমান উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির সংযোজন ঘটলেও তার সুফল সাধারণ কৃষকরা পাচ্ছেন না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উত্তরের বিভিন্ন জেলায় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো বাণিজ্যিকভাবে কৃষি ফার্ম গড়ে তুলছে। কৃষির মূল উপকরণ বীজ সরবরাহ ব্যবস্থা পুরোপুরি করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। এসব প্রতিষ্ঠান চড়ামূল্যে সাধারণ কৃষকের কাছে নিজস্ব কোম্পানির বীজ সার ও কীটনাশক বিক্রি করে শত শত কোটি টাকা মুনাফা করছে। আবার উৎপাদিত কৃষিপণ্য কৃষকের কাছ থেকে পানির দামে কিনে নিচ্ছে। পাইকার ও ফড়িয়ারাও কৃষকদের পণ্য কম দামে কিনে মুনাফা করছেন। কৃষক সে অর্থে কিছুই পাচ্ছেন না। ফলে দিনে দিনে উত্তরের কৃষকরা ঋণের জালে আটকা পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন।
সোমবার রাজশাহীর তানোর, গোদাগাড়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল ও নওগাঁর নিয়ামতপুর এলাকা ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার আগাম জাতের মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, কাঁচামরিচ, মুড়িকাটা পেঁয়াজ ও আলু আবাদ করে তারা বিপুল লোকসানের মুখে পড়েছেন। তানোরের চান্দুড়িয়া গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম বলেন, গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরজুড়ে সারা দেশের বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম উঠেছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। চড়া দাম দেখে পাঁচ বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করেছিলাম। কিন্তু জানুয়ারির শেষে জমি থেকে আলু তুলে পাইকারিতে মাত্র ১২ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। প্রতি কেজিতে আমার ক্ষতি হয়েছে ১৫ টাকা। পাঁচ বিঘা জমির আলু বিক্রি করে মোট ক্ষতি হয়েছে দুই লাখ ২০ টাকার উপরে। শরিফুল জানান, এই বিশাল ক্ষতি তার পক্ষে বহন করা কঠিন। মহাজনী ঋণ মেটাতে তিনি তিন বিঘা জমি এক প্রতিবেশীর কাছে লিজ দিয়েছেন। রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার আলীপুর গ্রামের চাষি বাবুল হোসেন জানান, এবার ফুলকপি চাষ করে ২৭ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে তার।
রাজশাহী কৃষি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোতালেব হোসেন জানান, আগাম আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় না। চাষিরা আলু তুলে বিক্রি করতে বাধ্য হন। এ মৌসুমে ফুলকপি, কাঁচামরিচ, মুড়িকাটা পেঁয়াজ, বাঁধাকপি ও মুলা চাষ করেও কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
শেরপুরে সবজির দাম অস্বাভাবিক কম, কৃষক দিশেহারা : বীজ, সার, কীটনাশকের দাম বেশি ও কৃষি শ্রমিকের চড়া মজুরি দিয়ে উৎপাদিত সবজির দাম পাচ্ছেন না শেরপুরের কৃষকরা। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ৩ থেকে ৪ টাকা কেজি এবং শিম ৭ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি মটরশুঁটি ২০ টাকা। ফুলকপি তিন থেকে চার টাকা পিস, বাঁধাকপি পাঁচ থেকে ছয় টাকা। আলু বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকা কেজি। মিষ্টিকুমড়া প্রতিটি ২০ টাকা। পেঁয়াজ কেজি ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা। বেগুন ১০ থেকে ১২ টাকা। অথচ রাজধানীতে সব কিছুই কয়েকগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষকরা জানান, উৎপাদন খরচ ওঠা তো দূরের কথা, সবজি তুলে বাজারে আনার পরিবহণ খরচও উঠছে না। ফলে অনেক কৃষক খেতের টমেটো খেতেই রেখে দিচ্ছেন। সেখানেই নষ্ট হচ্ছে ফসল। অনেকেই ক্ষোভে-দুঃখে সবজি খেত কেটে ফেলছেন। তবে কৃষি বিভাগ বলছে ভরা মৌসুমে বাজারে সবজির সরবরাহ বেশি থাকায় দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা।
শেরপুর সদর উপজেলার বলাইচর ইউনিয়নের শাহাব্দীর চর গ্রামের কৃষক অছিম উদ্দিন বলেন, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা মণ দরে। এতে লাভ তো দূরের কথা উৎপাদন খরচের অর্ধেকও উঠছে না। একই গ্রামের কৃষক আব্দুল বারেক বলেন, কপি ও আলুর দাম একেবারেই কম। বাজারে যামু যে গাড়ি ভাড়াও হয় না।’
চট্টগ্রামে আলু চাষে নিঃস্ব কৃষক : চট্টগ্রামে আলু চাষে নিঃস্ব হওয়ার পথে কৃষক। ফলন ভালো হলেও দাম পড়ে যাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন। সংরক্ষণ সুবিধা পর্যাপ্ত না থাকার কারণেও কৃষক আলুর দাম পাচ্ছেন না। এছাড়া টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, কাঁচামরিচসহ অন্যান্য সবজি চাষেও লোকসান হচ্ছে। লোকসানের ভার সইতে হচ্ছে কৃষকদের। লোহাগাড়া উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের আলু চাষি আবদুল করিম বলেন, আলু বিক্রি করে দুই মাসে আমাকে লোকসান দিতে হয়েছে ১০ হাজার ৬০০ টাকা। অর্থাৎ এই কৃষক উৎপাদন খরচই তুলতে পারেননি।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগের সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন যুগান্তরকে বলেন, কৃষকরাই দেশের কৃষিকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। অথচ তাদের বাঁচিয়ে রাখতে সরকারি সুযোগ-সুবিধা বা ভর্তুকি পর্যাপ্ত নয়। সরকার তাদের দিকে নজর দিচ্ছে না।
যশোরে দেনায় জর্জরিত চাষি : বর্গাচাষি রাশেদ আলী (৭০) এক ভ্যান মিষ্টিকুমড়া নিয়ে কাকডাকা ভোরে মোকামে এসেছেন। পাইকার প্রতি কেজি মিষ্টিকুমড়ার দাম হেঁকেছে সর্বোচ্চ ১২ টাকা। মন সায় না দিলেও নিরুপায় হয়ে ১২ টাকা কেজিতে বিক্রি করেন রাশেদ। পাশেই পেঁয়াজ বিক্রি করছিলেন কৃষক তাপস কুমার ঘোষ। দরকষাকষির পর ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পেরেছেন। মাথায় হাত দিয়ে তিনি বললেন, উৎপাদন খরচই উঠছে না। দায়দেনা কিভাবে পরিশোধ করবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। দেশের বৃহত্তম সবজির মোকাম যশোরের বারিনগরের একদিনের দৃশ্য এটি।
এক বুক ক্ষোভ নিয়ে সদর উপজেলার মথুরাপুরের কৃষক রাশেদ আলী বললেন, ত্রিশ বছর ধরে বর্গা চাষাবাদ করি। প্রতি বিঘা জমির বর্গা বাবদ বছরে ২৫ হাজার টাকা দিতে হয়। কয়েক মাস আগে খেতে মুলা চাষ করেছিলাম। বর্ষার কারণে গাছ মরে শেষ, এক টাকারও মুলা বিক্রি করতে পারিনি। এরপর চাষ করেছি মিষ্টিকুমড়া। কিন্তু দাম খুবই কম। আমরা চলব কিভাবে। বাকিতে তেল, সার, কীটনাশক কিনেছি। দোকানদার ৮০ হাজার টাকা পাবে। তিনি বলেন, আমরা বছরের পর বছর মার খাচ্ছি। আমাদের দেখার কেউ নেই।
সিলেটে সবজির হাটেও সিন্ডিকেট : সিলেটের জৈন্তাপুরের কৃষক যে তরমুজ ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা বিক্রি করেন, সেটা সিলেট নগরীতে বিক্রি হচ্ছে ৫-৬শ টাকায়। সিলেট নগরীর শহরতলির কৃষক যে টমেটো-শিম বিক্রি করেন ৫ টাকায়, সেই শিম নগরীতে বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকায়। এমনকি এসব কৃষিপণ্য আরও অনেক উচ্চমূল্যে রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে। মাঝখানে ঠকছেন মাঠের প্রান্তিক কৃষক। ক্রয়-বিক্রয়ের এই বিশাল তারতম্যের পুরো টাকাই যাচ্ছে ফড়িয়া-দালালদের পকেটে। সিলেট বিভাগের প্রান্তিক কৃষক, কৃষি অধিদপ্তর, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
স্থানীয় প্রান্তিক চাষির সবজির মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে আড়ালে তৎপর ফড়িয়া সিন্ডিকেট। সবজির মোকামের আড়তদাররা লোকসানের দায় নেন না। আর পরিবহন সিন্ডিকেটের থাবা তো আছেই। কৃষকরা সবজি বিক্রি করতে বাজারে গেলে সেখানের স্থানীয় পাইকার-ব্যবসায়ীরা জোটবদ্ধ হয়ে তারা পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেন। ফলে জিম্মি হয়ে পড়েন কৃষকরা।
বগুড়ায় হতাশ লাল মরিচ চাষিরা : বগুড়ার সারিয়াকান্দির বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা জমি থেকে লাল মরিচ তোলার পর বোরো ধান চাষাবাদের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন। তবে মরিচের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও বাজারে ভালো দাম না পাওয়ায় কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
বাড়তে পারে কোল্ডস্টোরেজের ভাড়া : মুন্সীগঞ্জের ছয় উপজেলায় আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগার আছে ৬৪টি। এ বছর সচল আছে ৫৬টি। এগুলোর ধারণক্ষমতা পাঁচ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন। গত বছর প্রতি বস্তা আলুর ভাড়া ছিল ২৫০ টাকা। এবার বস্তাপ্রতি আলু সংরক্ষণের ভাড়া ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন একাধিক হিমাগার মালিক কর্তৃপক্ষ। টঙ্গীবাড়ী উপজেলার মদিনা কোল্ডস্টোরেজের ম্যানজার মো. সাইফুল ইসলাম জানান, গত বছর বস্তাপ্রতি ভাড়া ছিল ২৫০ টাকা। এতে করে জেলার হিমাগারগুলোর মালিকপক্ষ লোকসান গুনেছেন। যার কারণে এ বছর সব হিমাগার কর্তৃপক্ষই ভাড়া বৃদ্ধি করবেন। সম্ভবত এ বছর বস্তাপ্রতি ৫০ টাকা বাড়ানো হতে পারে। এতে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম আলু উৎপাদনকারী জেলা মুন্সীগঞ্জের প্রান্তিক কৃষকের লোকসান আরও বাড়বে। লাভের আশায় আলু আবাদ করে লোকসানের মুখে পড়ছেন। সার, বীজ, কীটনাশকের দাম বেশি এবং শীত কম হওয়ায় এ বছর আলুর ফলন কম হয়েছে। এর মধ্যে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে অনেক। আগাম আলু করেও তারা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। মধ্যস্বত্বভোগী মজুতদার লাভ করছেন।
প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন-চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, বগুড়া, যশোর ব্যুরো, শেরপুর ও মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি।