
বিগত ১৫ বছর ধরে নিম্নমানের পাঠ্য বই ছাপানোর অভ্যস এবারও ত্যাগ করতে পারেনি অপেক্ষাকৃত ছোট প্রেসগুলো। নানা ফাঁকফোকর পেরিয়ে প্রায় ২০ শতাংশ নিম্নমানের পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে সব উপজেলায় বিতরণকৃত পাঠ্যবইয়ের মান যাচাই করার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, প্রথমে প্রেসে কাগজের মান (স্থায়িত্ব ও জিএসএম) ঠিক আছে কি না, তা দেখে ছাড়পত্র দিলেই বই ছাপা হয়। ছাপা হওয়ার পর মান যাচাই করে ফের ডেলিভারি জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এই স্তরকে (প্রিডেলিভারি ইন্সপেকশন) পিডিআই বলে। আর বই পৌঁছার পর প্রত্যেক উপজেলা থেকে বই সংগ্রহ করে সেগুলোর মান যাচাই করতে (পোস্ট ল্যান্ডিং ইন্সপেকশন) পিএলআই এজেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়। এবার এখনো পিএলআই এজেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়নি। খুব শিগিগরই পিএলআই এজেন্ট নিয়োগের টেন্ডার দেওয়া হবে। সরবরাহকৃত পাঠ্যবই নিম্নমান প্রমাণিত হলেই সংশ্লিষ্ট ছাপাখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নতুন শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের প্রায় ৪ কোটি শিক্ষার্থীর জন্য ৪০ কোটি ১৪ লাখ ৯৫ হাজার ৮৪১টি পাঠ্যবই ছাপানোর আয়োজন করা হয়েছিল। তবে পরে এসে দেখা যায়, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি চাহিদা জানানো হয়েছিল। নতুন করে হিসাব করে দেখা যায়, মোট বই ছাপতে হবে আসলে ৩৯ কোটি ৬০ লাখের মতো। এর মধ্যে সাড়ে ৩২ কোটি বই ছাপানো হয়েছে। এখানে ৭ কোটি পাঠ্যবই ছাপানো বাকি রয়েছে। শিক্ষাক্রম পরিবর্তন, পাঠ্যবই পরিমার্জনসহ কিছু সমস্যার কারণে এবার শিক্ষা বিভাগ থেকে আগেই বলা হয়েছিল, বই পেতে কিছুটা দেরি হবে। তবে যে এত দেরি হবে—সেটা অনেকের ধারণা ছিল না। দরপত্র, অনুমোদন, চুক্তির মতো কাজগুলোও যথাসময়ে না করায় এবং কাগজের মূল্য বৃদ্ধি, কৃত্রিম সৃষ্টি ও আর্ট কার্ডের সংকটের কারণে আরো বেশি দেরি হচ্ছে। বর্তমানে যে পরিস্থিতি তাতে, আগামী এপ্রিলের আগে সব বই পাবে না শিক্ষার্থীরা। গত বারের চেয়ে এবার কাগজের পুরুত্ব ও উজ্জ্বলতা বাড়ানো হয়েছে। গত বছর কাগজের পুরুত্ব ছিল ৭০, আর উজ্জ্বলতা ছিল ৮০। এ বছর কাগজের পুরুত্ব ৮০ এবং উজ্জ্বলতা ৮৫ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বার্স্টিং ফ্যাক্টর নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ১৬। জানা গেছে, প্রিডেলিভারি ইন্সপেকশনে নিম্নমানের কাগজে ছাপানো ৭ লাখ পাঠ্যবই কেটে ফেলা হয়েছিল।
এনসিটিবির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তারা প্রথমে সব শ্রেণির তিনটি বিষয়ের (বাংলা, ইংরেজি ও গণিত) বই দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। এরপর এসএসসি পরীক্ষার্থী হিসেবে দশম শ্রেণির বই ছাপার