Image description

Ali Ahsan Zonaed(আলী আহসান জুনায়েদ)

 
প্রথম আলো আজকে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ করতে যাওয়া নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে একটি নিউজ প্রকাশ করেছে। এই নিউজে আমার নাম উল্লেখ করে ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাদের সঙ্গে সমঝোতার ব্যাপারে কিছু বক্তব্য দেয়া হয়েছে যা সত্য নয়।
প্রথমত, যে কোন নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তই অঙ্কুর স্টেজে নানাবিধ অনিশ্চয়তার সম্মুখীন হয়। স্বাভাবিকভাবেই জাতীয় নাগরিক কমিটিতেও তা হচ্ছে। এটা খারাপ চোখে দেখার কিছু নেই। আমাদের জাতীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে গণতন্ত্র ফেরাতে হলে সকলেরই এরকম দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হবে; নতুন বাংলাদেশের তরুণরা সেই চ্যালেঞ্জসমূহই নেভিগেট করছে। তারই ধারাবাহিকতায় জাতীয় নাগরিক কমিটিতে বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রেই প্রোপার প্রসেস এবং ট্রান্সপারেন্সির অভাব আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ ধরণের সমস্যা যেন নতুন পার্টিতে না থাকে, সেজন্য নতুন রাজনৈতিক দলের গঠন প্রক্রিয়া এবং নেতৃত্ব নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলেছি। আমরা বলতে কারা? এখানে জানাকে থাকা জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী গড়ে উঠা বিভিন্ন সংগঠন থেকে আসা প্রতিনিধি, সাবেক পরিষদ, কওমী-হেফাজত অংশ, সাবেক শিবির, ইত্যাদি সবাই মিলে একসাথে এই দাবী তুলেছি। জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে তরুণ প্রজন্মের যারা সাহসিকতার সাথে অংশগ্রহণ করেছিল, কোন কোটারি প্রক্রিয়ায় তাদেরকে বাদ না দিয়ে সবাইকে সাথে নিয়ে এই নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা উচিত বলে আমরা মনে করি। দুঃখজনকভাবে, বর্তমানে যেভাবে এই রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব গঠন হচ্ছে তা গণতান্ত্রিক এবং ইনক্লুসিভ হচ্ছে না। এক্ষেত্রে কে কোন পদে আছে সে সংক্রান্ত আলোচনা অবান্তর। বরং যোগ্য যে কেউ যেন তার পছন্দের পদে যেতে পারে এবং এই যোগ্যতার পরিমাপক কী সেটা নিয়েই আমরা আলোচনা করে আসছি। এই সমস্যাটা সমাধান করাই এখন আমাদের প্রধান ও মূল লক্ষ্য।
দ্বিতীয়ত, নতুন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পদগুলো নিয়ে (পত্রিকার ভাষায় 'সুপার সিক্স'!) এক ধরনের বোঝাপড়া হয়েছে বলে প্রথম আলো যে নিউজ করেছে আমার তা জানা নেই। কিভাবে নতুন দলের নেতৃত্ব নির্বাচন করা হচ্ছে, সেই প্রক্রিয়া নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির মধ্যে কোন খোলামেলা আলোচনা হয়েছে বলেও আমার জানা নাই। আমি মনে করি, নাগরিক কমিটির সবাইকে সাথে নিয়ে খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা উচিত। অন্যথায়, এই দল জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করা সকল তরুণদের দল হয়ে উঠতে নিদারুণ ভাবে ব্যর্থ হবে যা বাংলাদেশের মানুষের জন্য দুঃখজনক হবে। পদ-পদবী সংক্রান্ত কোন ধরণের 'সমঝোতা' কোন পক্ষের মাঝে হয় নি, কারণ পদ-পদবী নিয়ে নেগোসিয়েশন করতে আমরা আগ্রহী না। ট্রান্সপারেন্সি এবং প্রোপার সিস্টেম ডেভেলপ করে যেন প্রকৃত নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়ন করা যায়- সে সংক্রান্ত আলোচনায় আদতে 'সমঝোতা' করা সম্ভব নয়।
আমি পুনরায় বলছি, নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার জন্ম সর্বদা কঠিন হয়, তবে এর অর্থ এই নয় যে এটা আশাব্যঞ্জক প্রক্রিয়া নয়। দেশের স্বার্থে আসুন, আমরা একে অপরের প্রতি আস্থা রাখি।