
বাংলাদেশে বেকারত্ব একটি বড় সামাজিক সমস্যা। অনেক শিক্ষিত তরুণ-তরুণী চাকরির অভাবে হতাশায় ভোগেন। তবে বর্তমান সময়ের বাজার বুঝে কিছু সৃজনশীল ও দক্ষতাভিত্তিক কাজ করলে বেকারত্বকে কর্মসংস্থানে রূপ দেওয়া সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেকারদের জন্য লাভজনক কাজ বেছে নেওয়ার সময় এমন কিছু পেশা খুঁজতে হবে যেগুলোতে বিনিয়োগ কম, কিন্তু আয়ের সম্ভাবনা বেশি।
চলুন দেখে নেওয়া যাক কিছু লাভজনক ও সম্ভাবনাময় কাজ:
১. ফ্রিল্যান্সিং
বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং সবচেয়ে জনপ্রিয় ও লাভজনক কাজের একটি। বিশেষ করে গ্রাফিক ডিজাইন, কন্টেন্ট রাইটিং, ভিডিও এডিটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, এবং ডিজিটাল মার্কেটিং-এর মতো কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছ। আপওয়ার্ক, ফাইবার, এবং পিউপুল পার আওয়ার-এর মতো প্ল্যাটফর্মে কাজ করে ভালো উপার্জন করা সম্ভব।
২. অনলাইন বিজনেস (ই-কমার্স ও ড্রপশিপিং)
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং ওয়েবসাইট ব্যবহার করে সহজেই নিজের ব্যবসা শুরু করা যায়। ক্লথিং, কসমেটিক্স, হোম ডেকোর, হ্যান্ডমেড পণ্য, বা কাস্টমাইজড গিফট আইটেম বিক্রি করে ভালো লাভ করা সম্ভব।
৩. টিউশন ও অনলাইন কোচিং
যারা একাডেমিকভাবে ভালো, তারা বাড়িতে টিউশন করিয়ে আয় করতে পারেন। এছাড়া, জুম, গুগল মিট, ইউটউব এর মাধ্যমে অনলাইন ক্লাস বা কোর্স করানোও লাভজনক।
৪. কনটেন্ট ক্রিয়েশন (ইউটউব, ফেসবুক, টিকটক, ব্লগিং)
ভালোমানের কনটেন্ট তৈরি করলে ইউটউব ও ফেসবুক থেকে ভালো ইনকাম করা সম্ভব। শিক্ষামূলক, ভ্রমণ, রান্না, টেকনোলজি, বা ভ্লগিং ক্যাটাগরিতে কনটেন্ট বানিয়ে মনিটাইজেশন করা যায়।
৫. ডেলিভারি ও অন-ডিমান্ড সার্ভিস
বর্তমানে রাইড শেয়ারিং (উবার, পাঠাও, সহজ) বা ফুড ডেলিভারি (ফুডপান্ডা, হাংরিনাকি) প্ল্যাটফর্মে কাজ করে ভালো ইনকাম করা যায়। যারা বাইক বা সাইকেল চালাতে পারেন, তাদের জন্য এটি সহজ উপার্জনের সুযোগ।
৬. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ও ড্রপশিপিং
কোনো পণ্য নিজের কাছে না রেখেও দারাজ, এ্যমাজন, বা অন্যান্য ই-কমার্স ওয়েবসাইটের পণ্য অ্যাফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে বিক্রি করে কমিশন আয় করা যায়।
৭. অ্যাগ্রো বিজনেস ও গবাদিপশু পালন
গ্রামাঞ্চলে যারা থাকেন, তারা কোয়েল, হাঁস-মুরগি পালন, মাছ চাষ, বা সবজি চাষ করে অল্প বিনিয়োগে লাভজনক ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
৮. ডিজিটাল প্রোডাক্ট ও অনলাইন কোর্স বিক্রি
যারা স্কিলড, তারা ই-বুক, ডিজিটাল আর্ট, গ্রাফিক ডিজাইন টেমপ্লেট, মিউজিক বিট, অথবা অনলাইন কোর্স বিক্রি করতে পারেন। এটি একবার তৈরি করলে দীর্ঘমেয়াদে আয়ের পথ খুলে যায়।
৯. লোকাল সার্ভিস বিজনেস (হোম ডেলিভারি, রিসেলিং, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট)
অনেকেই এখন ফাস্টফুড, কেক, ফ্লাওয়ার, বা গিফট আইটেম হোম ডেলিভারির মাধ্যমে বিক্রি করছেন। এছাড়া, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বা ফটোগ্রাফি করেও ভালো আয় করা যায়।
১০. ডাটা এন্ট্রি ও ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
যারা প্রযুক্তিতে দক্ষ নন, তারাও ডাটা এন্ট্রি, প্রোডাক্ট লিস্টিং, বা ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করে আয় করতে পারেন।
বেকারত্ব কাটিয়ে উঠতে হলে শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে নিজের দক্ষতা তৈরি করে বিকল্প আয়মুখী কাজের দিকে নজর দিতে হবে। বর্তমান সময়ের চাহিদা অনুযায়ী অনলাইন ও অফলাইন উভয় ক্ষেত্রেই লাভজনক কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে। যে কেউ একটু চেষ্টা করলেই নিজের জন্য একটি লাভজনক ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে পারেন।