Image description
রাজু ভাস্কর্যে ছাত্র-জনতার অবস্থান

কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার তরুণ মো. রাব্বি। জুলাই বিপ্লবে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সুস্থ হওয়ার পর গ্রামের বাড়ি ফিরে যান। 

সোমবার তাড়াইল থেকে সাইকেল চালিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে এসে উপস্থিত হয়েছেন। উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ছাত্র-জনতার অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। 

হ্যান্ডমাইকে বক্তৃতা করতে গিয়ে তিনি বলেন, জুলাইয়ে আমি মিরপুরে গুলিবিদ্ধ হয়েছি। সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে আছি। তবে ছয় মাসেও মাথায় থাকা একটি গুলি এখনো বের হয়নি। এখনো সরকার খুনি আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করেনি।

তিনি বলেন, শুনেছি আওয়ামী লীগ আবার ফিরে আসবে। যারা আন্দোলন করেছি তাদের মেরে ফেলবে। তাই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন হচ্ছে জেনে এসেছি। আশা করছি, বাড়ি ফেরার আগে জানতে পারব প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন।

এদিকে মো. রাব্বিকে তাৎক্ষনিকভাবেই চিকিৎসা পরামর্শ দেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ডা. হাবিবুল্লাহ মারজান। তিনি জানান, মঙ্গলবারই রাব্বির মাথায় থাকা গুলি বের করতে অপারেশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।  

জানা গেছে, ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে শুরু হওয়া কর্মসূচি সোমবার রিকশাচালক, মুটে মজুরসহ নানা শ্রেণি মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে পঞ্চম দিন অতিবাহিত করেছে।

এদিন সকাল থেকে পালাক্রমে অবস্থান কর্মসূচি তত্ত্বাবধান করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহেদ ও সদস্য সচিব ফজলুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক সানোয়ারা খাতুন, যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ ও সদস্য সচিব মুহিব মুশফিক খান।

অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের রাজনৈতিক প্রধান আনিছুর রহমান, সাংগঠনিক প্রধান শফিউর রহমান, সদস্য সচিব হাসান মোহাম্মদ আরিফ, যুগ্ম আহবায়ক সাইয়েদ কুতুব, সহকারী সদস্য সচিব আবদুস সালাম, গালীব ইহসান ও ডা. মাসুম বিল্লাহ, সদস্য মাহমুদুল হাসান, বায়েজিদ বোস্তামী ও ওয়াসিম আহাম্মদ প্রমুখ।

এছাড়াও অংশ নেন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শিহাব-উল হক, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব ইশতিয়াক আহমেদ ইফাত, সহকারী সদস্য সচিব মো. আশরাফুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম, সদস্য মো. জুবায়ের আহমেদ প্রমুখ।

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তৃতা করেন মোহাম্মদ নুরুল হুদা ডিউক। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কুখ্যাত সন্ত্রাসী দল, তারা ১৬ বছর ধরে স্বৈরশাসন কায়েম করেছিল। এজন্য শেখ হাসিনাকে আন্তর্জাতিকভাবে খুনি ও স্বৈরশাসক হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করা হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, এখনো আমরা জাতীয়ভাবে শেখ হাসিনাকে ও তার দলকে নিষিদ্ধ করতে পারি নাই। 

বাদ মাগরিব অবস্থানস্থলে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ভিডিও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও শেখ হাসিনাসহ গণহত্যায় জড়িতদের বিচারে জুলাই বিপ্লবের শহিদদের পরিবারের বক্তব্য তুলে ধরা হয়।