Image description

 তারেক মাহমুদ  (Tareq Mahmud)

 

মাসুদ ইব্রাহীমের ছবিটা দেখার পর থেকেই একটু অস্বস্তি লাগছিলো। তাকে কোথায় যেন দেখেছি। পরে পরিচিতদের লেখা থেকে জানলাম, সে তা'মিরুল মিল্লাতের ছাত্র ছিলো।

তার ব্যাচের ছাত্রদের সাথে আমার বিশেষ সুসম্পর্ক ছিলো। ওদের ব্যাচের প্রায় সকলকে আমি চিনতাম। কারও সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বা পরিচয় ছিলো। কারও সাথে মোটামুটি আর বাকীদের চেহারায়।

আমার পরিচিত এক ছাত্রকে পুলিশ গুম করে পরে জঙ্গি নাটকের মাধ্যমে ক্রসফায়ার দিয়েছে; আর আমি ঘটনাটা জানতামই না! এটা কীভাবে সম্ভব? আমি বেশ কিছু সময় দেশের বাইরে অবস্থান করলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় ছিলাম। তাই এ রকম ঘটনা নজরের বাইরে পড়ে যাওয়ার কথা ছিলো না।

ঘটনা হলো, সংগীত শিল্পী মাসুদ ইব্রাহীমকে ক্রসফায়ার দিয়েছে জঙ্গি সাজিয়ে। তাকে খুন করার পাশাপাশি তাকে নিয়ে সিম্প্যাথি জানানোর সকল উপায় বন্ধ করেছে তারা।

আমি বেশ ভালোভাবে চিনতাম মাসুদ ইব্রাহীমকে। তাই কসম কেটেও বলতে পারি, এ ছেলের সাথে জঙ্গিবাদের সম্পর্ক থাকার সম্ভবনা নেই। তার জগত ছিলো সংগীত। গান গাওয়া আর বন্ধুদের সাথে দুষ্টুমির বাইরে তার বিচরণ বিশেষ ছিলো না। ফজরের নামাজের জন্য মসজিদে যাওয়ার পথে তাকে ধরে নি যাওয়া হয়।

তার প্রিয় বন্ধুরাও প্রতিবাদ করতে সাহস করেনি। তারা জানত প্রতিবাদের পরিণতি। আমরা পরিচিতরা জানতেই পারিনি, আমাদের এক ছোটোভাইকে হত্যা করেছে সরকারি খুনিরা। কেউ কেউ জেনেও অন্যদের সাথে শেয়ার করা ঝুঁকিপূর্ণ গণ্য করেছেন।

 

তাহলে, গ্রামের দরিদ্র পরিবারের যাদের জঙ্গি নাটকের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে - তাদের কী অবস্থা! তাদের পক্ষে কোনো আওয়াজও তো নেই। কেউ তো নেই তাদের পক্ষে সাফাই দেওয়ার।

 

তারা তো জঙ্গিবাদের তকমা নিয়ে বেইনসাফের দুনিয়ার প্রতি বুকভরা অভিযোগ নিয়ে শুয় আছে নির্জন কোনো কবরে। তাদের বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজনরা তো হয়তো এখনও মাথা নিচু করে সমাজে চলাচল করেন। কারণ, ডিবি/সিটিটিসি/র্যব অফিসের শিক্ষিত ও ভদ্রলোকেরা বলেছে, আপনাদের সন্তান/স্বজন জঙ্গি।

 

হায়! সামনাসামনি এতো পাপ করেছে বদমাশ মুজিবের বেজন্মা চেলারা! চাপাপড়া জঙ্গি নাটকের গল্পগুলোর খোঁজ নেবে কারা? ভদ্র সমাজ তো চোখের সামনে ঘটা প্রকাশ্য খুনের ঘটনাও বিশ্বাস করতে চায় না!