![Image description](https://content.bdtoday.net/files/img/202502/cd90312b771838e4b21ba83ffb722bb1.png)
বিগত সরকারের সময় আর্থিক খাতের অব্যবস্থার কারণে অন্তত ১০টি ব্যাংক তীব্র ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এমতাবস্থায় সঙ্কট থেকে উত্তরণে এবং গ্রাহকদের আস্থা অটুট রাখতে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকগুলোকে সরকার তারল্য সহায়তা দিচ্ছে।
দেশের আর্থিক খাত নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে। তবে প্রতিবেদনে ব্যাংকগুলোর নাম উল্লেখ করা হয়নি।
প্রতিবেদনে দেশের আর্থিক খাতের বর্তমান অবস্থার বিষয়ে বলা হয়, খেলাপি ঋণের কারণে আর্থিক খাত উল্লেযোগ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার সঙ্গে মিল রেখে ঋণ শ্রেণিকরণ ও প্রভিশনিং সংক্রান্ত বিধি-বিধান হালনাগাদ করেছে। এর ফলে খেলাপি ঋণের প্রকৃত পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২০২৩ সালের জুন শেষে ব্যাংক খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। বিধি-বিধান হালনাগাদ করার পর ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা। এটি ব্যাংক খাতে মোট বিতরণকৃত ঋণের ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। গত ২০১১ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল মোট বিতরণকৃত ঋণের ৬ দশমিক ১২ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আর্থিক খাতের বিদ্যমান সঙ্কট থেকে উত্তরণে ও ব্যাংক খাতে গ্রাহকদের আস্থা অটুট রাখতে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা প্রদানসহ ইতোমধ্যেই পাঁচ দফা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
অন্যান্য পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে- টাস্কফোর্স গঠন করে ব্যাংকের ঝুঁকি ও প্রকৃত অবস্থা সঠিকভাবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী নিরূপণের লক্ষ্যে ‘অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ’ এর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ ধারাবাহিকতায় বিশ্বমানের একাউন্টিং ফার্ম ‘ইওয়াই’ ও ‘কেপিএমজি’ ৬টি ব্যাংকের ‘অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ’ সম্পাদন কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং এর রিভিউয়ের কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে আরেকটি ফার্ম ‘ডেলোইটি’কে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ব্যাংক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন এবং ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যাংকের লুণ্ঠিত সম্পদ পুনরুদ্ধারে ব্যাংকের আইন বিভাগ শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নীতিমালা জারি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আর্থিক খাত তথা ব্যাংক খাতের পরিস্থিতির উন্নয়নে অধিকতর করণীয় শিরোনামে আরও চারটি সুপারিশ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- দ্রুত ‘অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ’ সম্পাদন করে ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থা যাচাই করা; ‘অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ’ সম্পাদনের পর ব্যাংকের ঝুঁকি বিবেচনায় প্রয়োজনে একীভূতকরণ (মার্জার) ও অধিগ্রহণ (এক্যুয়িজিশন) এর পদক্ষেপ নেওয়া; এ লক্ষ্যে ব্যাংক রেজুলেশন অর্ডিন্যান্স জারিসহ প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি-বিধান প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া এবং দেশের অর্থ পাচারকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক তৎপরতা জোরদার করা।
সারাবাংলা