![Image description](https://content.bdtoday.net/files/img/202502/a34847431bd41a679efad35ab62a1168.png)
ধানমন্ডি ৩২ ও প্রায় সারা দেশব্যাপী গত দুইদিন সংঘটিত অস্বাভাবিক ভাঙচুর ও সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ ও তা প্রতিরোধে সরকারের বিবৃতিনির্ভর নির্লিপ্ততায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান কলেন, শুধু দায়সারা বিবৃতি দিয়ে নয়, যে কোনো পরিস্থিতি আইনসিদ্ধভাবে মোকাবেলায় সরকারের দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবি এসব কথা বলে। এতে ধ্বংসাত্মক তৎপরতার পথ পরিহার করে আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার দোসররা দলীয়করণ ও পরিবারতন্ত্রের সীমাহীন লালসা-তাড়িত কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সবচেয়ে বেশি অপূরণীয় ক্ষতি করেছে। তাই বলে আইনসিদ্ধ প্রতিক্রিয়ার পথ অনুসরণ না করে দেশব্যাপী যে প্রতিশোধপ্রবণ ভাঙচুর ও সহিংসতা চলেছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না, এটি জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ সর্ম্পকে দেশ-বিদেশে ইতিবাচক কোনো বার্তা দিবে না।
তিনি আরও বলেন, আগে থেকে সহিংস কর্মসূচির ঘোষণা থাকার পরও আইনশৃঙ্খলা সংস্থা ও তার সঙ্গে সহায়ক হিসেবে দায়িত্বপালনরত সেনাবাহিনী, তথা সরকার কার্যকর নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আশঙ্কাজনক ভাবে নির্লিপ্ততার পরিচয় দিয়েছে। পরবর্তীতে ঘটনাটি ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত’ এমন বিবৃতি দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টাও লক্ষণীয়। তাই শুধু দায়সারা বিবৃতি দিয়ে নয়, যে কোনো পরিস্থিতি আইনসিদ্ধভাবে মোকাবেলায় সরকারের দৃশ্যমান ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি বাস্তবে পতিত আওয়ামী কর্তৃত্ববাদের পুনরুত্থানকামী মহলকেই অধিকতর সুযোগ করে দেওয়ার শঙ্কা তৈরি করছে। এমনটি অব্যাহত থাকলে নজিরবিহীন আত্মত্যাগের বিনিময়ে সূচিত নতুন বাংলাদেশের অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের পথ রুদ্ধ হয়ে পড়বে, একইসঙ্গে গণতান্ত্রিক উত্তরণ, সুশাসন এবং বিশেষ করে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার সম্ভাবনাকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে খাদের কিনারায় ঠেলে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনাসহ কর্তৃত্ববাদের সকল দোসরদের সুনির্দিষ্ট অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা নতুন বাংলাদেশর স্বপ্নপূরণের সর্বোচ্চ প্রাধান্যপ্রাপ্ত করণীয়। তবে, এ জন্য প্রতিশোধপ্রবণ ও আত্মঘাতী মব-জাস্টিস নয়, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের পথ অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক।
একইসঙ্গে ভিন্নমত পোষণকারীদের মামলা দিয়ে হয়রানির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে সকলের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষায় রাষ্ট্র ও সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেবে এবং সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজন সহনশীলতার পরিচয় দেবে এমন প্রত্যাশাও করে টিআইবি।