মিথ্যা বা হয়রানিমূলক অধিক সংখ্যক আসামির মামলায় অপরাধ সংঘটনে কোনো আসামির সুনির্দিষ্ট কোনো ভূমিকার উল্লেখ না থাকলে সে আসামিকে গ্রেপ্তার না করার সুপারিশ করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন।
এর জন্য পুলিশের প্রতি একটি নির্দেশনা জারি করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) কমিশনের প্রধান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমানের নেতৃত্বে বিচার বিভাগ সংস্কারের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা বরাবর হস্তান্তর করা হয়।
কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন, হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি এমদাদুল হক, ফরিদ আহমেদ শিবলী, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, মো. মাসদার হোসেন, সিনিয়র অ্যাডভোকেট তানিম হোসেইন শাওন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপন ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আরমান হোসাইন।
সরকার বিচার বিভাগকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব করার লক্ষে ৩ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনক্রমে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়।
সংস্কার প্রস্তাবের সার সংক্ষেপে ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রতিরোধ’ নিয়ে বলা হয়, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রতিরোধ বিষয়ে একটি বাস্তবানুগ আইন প্রণয়নের লক্ষে নিবিড় ও ব্যাপক পরীক্ষা নিরীক্ষা ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ; আইনে সংযোজন ও সংশোধন করা।
মিথ্যা বা হয়রানিমূলক মামলা বলে সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ থাকলে (বিশেষত এজাহারে অস্বাভাবিক সংখ্যক অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম থাকলে), অপরাধ সংঘটনে কোনো আসামির সুনির্দিষ্ট কোনো ভূমিকার উল্লেখ এজাহারে না থাকলে সে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হবে না এ মর্মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুলিশের প্রতি নির্দেশনা জারি করা। মিথ্যা বা হয়রানিমূলক মামলা বলে সন্দেহ করা যায় এরূপ মামলায় কোনো আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে পাবলিক প্রসিকিউটর বা ক্ষেত্রমত, কোর্ট ইন্সপেক্টর বা কোর্ট সাব-ইন্সপেক্টর, আদালতে ওই আসামির জামিনের বিরোধিতা করবে না এ মর্মে আইন মন্ত্রণালয় পাবলিক প্রসিকিউটরদের প্রতি নির্দেশনা দিতে হবে।
এরই মধ্যে যে সব মামলা পুলিশ বা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দায়ের হয়েছে এবং তদন্তাধীন আছে সেগুলোর তদন্ত যাতে দ্রুত সম্পন্ন করে নিরাপরাধ ব্যক্তিদের ব্যাপারে ফাইনাল রিপোর্ট প্রদান করা হয় বা অভিযোগপত্রে তাদের অব্যাহতি দেওয়ার (নট সেন্ট আপ) আবেদন করা হয়, সে জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্দেশনা প্রদান করা।
এসব বিষয়ে তদারকির জন্য প্রতি বিভাগে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করা যাতে কোনো প্রকৃত অপরাধী পুলিশের সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে মামলা থেকে অব্যাহতি না পায়।