Image description
 

ঢাবি অধিভুক্তি বাতিল চেয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সাত কলেজ মিলে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি করে আসছিলেন কলেজগুলোর সাধারণ শিক্ষার্থীরা।এদিকে, প্রথম দিকে সাত কলেজের সাথে থাকলেও কয়েক সপ্তাহ ধরে সাত কলেজ থেকে আলাদা হয়ে নিজেদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চেয়ে আন্দোলন, অনশন, সড়ক-রেলপথ অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।  তাদের দাবি, সব দিক থেকে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কেন তিতুমীরকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করা হবে না? সর্বশেষ গত সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষার্থীরা সড়কের সঙ্গে রেলপথ অবরোধ করলে ওই দিন রাতেই  শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে সাত দিনের জন্য কর্মসূচি স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে তিতুমীর কলেজের এই আন্দোলনকে অযৌক্তিক ও দেশকে অস্থিতিশীল করার আন্দোলন বলে মনে করছেন দেশের নানা শ্রেণিপেশার মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, কলেজের ব্যানার খুলে বিশ্ববিদ্যালয় ব্যানার লাগিয়ে, মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলে, পাথর ছুঁড়ে মানুষকে রক্তাক্ত করে অন্তত কোনো দাবি আদায় করা যায় না। দেশের সব মানুষ তাদেরকে নিয়ে ট্রোল করবে স্বাভাবিক। কারণ ট্রোল করার মতো কাজ করেছে তারা।

 

তিতুমীর কলেজের এমন সিদ্ধান্তের ফলে অনেক সময় লজ্জার মুখে পড়তে হচ্ছে বলেও জানান বাকি ৬ কলেজের শিক্ষার্থীরা।তারা বলছেন, যেহেতু সাত কলেজের মধ্যে তিতুমীরও ছিল তাই মানুষ তাদেরকে নিয়েও মাঝেমধ্যে ট্রোল করছে। তাই তিতুমীরকে ছাড়াই বাকি ৬ কলেজ নিয়ে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় চান তারা। তবে তাদের অনেক শিক্ষার্থী আমাদের সাথে আসতে চায় সেক্ষেত্রে তাদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে জানান তারা।ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী আজিজুর রহমান পাভেল বলেন, দেখেন তিতুমীর কলেজের সকল শিক্ষার্থী তিতুমীরের বর্তমান ডে কাঠামোর কথা বলা হচ্ছে তার সাথে একমত না। আমরা জানি এই কাঠামো বাংলাদেশের মতো দেশে ভালো কিছু সাধারণ শিক্ষার্থীকে দিতে পারবে না। তাই তিতুমীর যদি একক কিছু করতে চায় এবং ৭ কলেজ নিয়ে যে চিন্তা হচ্ছে সেটাতে না আসে তাহলে তাদের জাতীয় কিংবা ঢাবি অধিভুক্তিই শেষ জায়গা হবে।যেহেতু এই দুটির একটিও তিতুমীরের সাধারণ শিক্ষার্থীর জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর হবে তাই আমাদের পক্ষ থেকে সব সময় তাদের জন্য সেন্ট্রালে আসার আহ্বান থাকবে। আর ৬ কলেজ এর শিক্ষার্থীরা যদি এমন দাবি করে তাহলেও সেটাও আবেগের জায়গা থেকেই করেছে। আমি চাই ৭ কলেজ নিয়ে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হোক।

 

ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী মাসুমা ইসলাম বলেন, তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা কি চায় তারা নিজেরাই জানে না। তাদের কিছু শিক্ষার্থী সাত কলেজের সাথে থাকতে চায় আবার কিছু তাদের একক বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবির সাথে থাকতে চায়। তাদেরকে আগে মন স্থির করতে হবে। যেকোনো একটা বেছে নিতে হবে। আর যদি না হয় তাহলে বাকি ৬ কলেজকে নিয়েই একক বিশ্ববিদ্যালয় হোক।তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজনৈতিক নীলনকশায় পা দিচ্ছে উল্লেখ করে শহিদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী উমায়েতুল ইসলাম প্রান্ত বলেন, তিতুমীর সাত কলেজের ঐক্য ভেঙে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি অযৌক্তিক আন্দোলন চালায়। আমরা বাকি কলেজের শিক্ষার্থীরা যতটুকু জেনেছি কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি এই অযৌক্তিক আন্দোলনের নীলনকশা দিয়েছিল। তিতুমীরের অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী এর বিপক্ষে থাকলেও নানাভাবে হুমকির মুখে তাদের কণ্ঠরোধ করা হয়। আমি মনে করি এখন তিতুমীরের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তাদের পরিচয় কি হবে। তবে বাকি ছয় কলেজ সবসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য কাজ করে যাবে।বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থী আসিফ আলি বলেন, তিতুমীর যদি না আসে তাহলে বাকি ৬ কলেজের জন্য ভাল বলে মনে করি আমি। কারণ, তিতুমীরের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী আছে যা বহন করা কষ্টসাধ্য। তারা না আসলে বাকি কলেজগুলোকে নিয়ে সুন্দরভাবে কার্যক্রম চালানো সম্ভব হবে। তবে তাদের অনেক শিক্ষার্থী আমাদের সাথে আসতে চায় তাদের স্বাগত জানাই। আর এসব সিদ্ধান্ত রাষ্ট্র নিবে যেটা ভালো মনে হয় সেটা করবেন তারা।এ বিষয়ে তিতুমীর ঐক্যের অন্যতম মুখপাত্র আর.এফ রায়হান বলেন, আমরা শুরু থেকেই বলে এসেছি ছয় কলেজ আলাদাভাবে সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয় হলে আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু আমাদের তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করতে হবে।