Image description
 

লন্ডনের পর এবার বাংলাদেশের গাজীপুরে বিতর্কে জড়ালেন শেখ হাসিনার বোনঝি ও ব্রিটেনের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গাজীপুরে তার পরিবারের মালিকানাধীন আট বিঘা জমির ওপর নির্মিত “টিউলিপ'স টেরিটরি” নামে একটি ডুপ্লেক্স বাগানবাড়ির বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে।

টিউলিপের বাগানবাড়ি নিয়ে তদন্তে দুদক

গাজীপুরের কানাইয়া এলাকায় অবস্থিত চারটি বাগানবাড়ি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, যার মধ্যে একটি টিউলিপের বাবার নামে। বাংলাদেশ ভূমি দফতরের নথি অনুযায়ী, চারটি বাগানবাড়ির দলিলে ২৫ বিঘা জমির উল্লেখ রয়েছে। তবে স্থানীয়দের দাবি, প্রকৃত জমির পরিমাণ এর চেয়ে অনেক বেশি, যা কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে রাখা হলেও কাগজপত্রে সঠিক তথ্য নেই।

 

দুদক ইতোমধ্যে গাজীপুর জেলা প্রশাসনের কাছে শেখ হাসিনা এবং তাঁর পরিবারের জমির বিস্তারিত তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে। গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কায়সার খসরু বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ভূমি দফতরের কাছে জমির নথি চেয়েছি। সঠিক তথ্য পাওয়ার পর বোঝা যাবে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে কত পরিমাণ জমি রয়েছে।”

গণআন্দোলনের পর সম্পত্তি ভাঙচুরের অভিযোগ

গত আগস্টে গণআন্দোলনের জেরে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন এবং দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। সেই সময় তাঁর বাসভবনসহ একাধিক সম্পত্তিতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাকর্মীদের সম্পত্তিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

টিউলিপের নামসংবলিত “টিউলিপ'স টেরিটরি” নামের বাগানবাড়িটিও গণআন্দোলনের সময় হামলার শিকার হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভাঙচুরের চিহ্ন এখনো রয়েছে, এবং সেই সময়ের পর থেকে বাড়িটিতে কোনো নিরাপত্তারক্ষী বা বাসিন্দাকে দেখা যায়নি।

টিউলিপের লন্ডনের ফ্ল্যাট বিতর্কের পর গাজীপুরেও প্রশ্ন

গত মাসেই ব্রিটেনের মন্ত্রিপদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক। ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘ফিনান্সিয়াল টাইমস’-এর এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, তিনি এক আবাসন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট গ্রহণ করেছিলেন। এবার গাজীপুরের সম্পত্তি নিয়েও তার পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলো।

ভূমি দফতরের এক কর্মকর্তা জানান, “হতে পারে জমি কেনা হয়েছে, কিন্তু এখনো মিউটেশন হয়নি।” তবে দুদকের তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনা শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সম্পদ সম্পর্কিত বিতর্ক আরও গভীর করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে চলমান তদন্তকে জোরদার করবে।