বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সাফজয়ী ফুটবলার মাতসুশিমা সুমাইয়া সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হয়রানি ও হত্যার হুমকি পেয়েছেন। এ ঘটনায় কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাফুফে।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) মিডিয়া ম্যানেজার সাদমান সাকিবের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুমাইয়ার হুমকিদাতার বিরুদ্ধে বাফুফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সেই সঙ্গে যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানায় বাফুফে।
সবশেষে বলা হয়, দেশের প্রতিনিধিত্ব করা কোনো ক্রীড়াবিদ অভব্য আচরণের শিকার হতে পারে না। নিজেদের খেলোয়াড়দের সুরক্ষা দেওয়া এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতি বাফুফে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এর আগে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে সুমাইয়া লিখেন, ‘আসসালামু আলাইকুম। আমার নাম মাতসুশিমা সুমাইয়া। আমি বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের একজন খেলোয়াড়। আন্তঃস্কুল পর্যায় থেকে শুরু করে মালদ্বীপে লিগ খেলা এবং ২০২৪ সালে বাংলাদেশের হয়ে সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের যাত্রাপথে মিশ্র অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমার এই পথ বেছে নেওয়ার কারণ হলো- যেসব বাবা-মা তাদের সন্তানদের শুধু পড়াশোনায় ডুবিয়ে রাখেন, তাদেরকে ফুটবলে উৎসাহ দেওয়া।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি দেখাতে চেয়েছিলাম যে আবেগ এবং নিষ্ঠা সমস্ত বাধা ভেঙে দিতে পারে। কিন্তু আজ, আমি এখানে অনুশোচনা নিয়ে বসে আছি যে - আমি আমার শিক্ষা, আমার পরিবার, আমার ঈদ, সবকিছু ত্যাগ করেছি এমন একটি দেশের সেবা করার জন্য, যারা আমাদের সংগ্রামের প্রশংসা করতে জানে না। ফুটবল খেলার জন্য আমি আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে লড়াই করেছি এই বিশ্বাসে যে, আমার দেশ আমার পাশে থাকবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।’
কেউই একজন ক্রীড়াবিদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা সত্যিই চিন্তা করে না। আমার এবং আমার সতীর্থরা যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছি, সেটা নিয়ে ইংরেজিতে একটি চিঠি লেখার ন্যূনতম যোগ্যতা আমার আছে। গত কয়েকদিন ধরে আমি খুন এবং ধর্ষণের অসংখ্য হুমকি পেয়েছি! এমন সব কথা শুনতে হচ্ছে যা কখনো কল্পনাও করিনি! এসব আমাকে ভেঙে দিয়েছে! আমি জানি না এই আঘাত থেকে সেরে উঠতে আমার কতক্ষণ লাগবে। তবে আমি মনে করি, কাউকে যেন তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য এই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে না হয়’-যোগ করেন ২৩ বছর বয়সি এই ফুটবলার।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালে জাপানে জন্ম নেওয়া সুমাইয়ার বাবা বাংলাদেশি এবং মা জাপানিজ। দুই বছর বয়সেই জাপান থেকে পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশে আসেন তিনি। শৈশব থেকেই ফুটবলকে ধ্যান-জ্ঞান করা সুমাইয়া ২০২৩ সাল থেকে জাতীয় দলের নিয়মিত মুখ।