ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক লেপার্ড ট্যাঙ্ক পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনো যুদ্ধবিমান দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শুলজ। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, অস্ত্র প্রতিযোগিতার নিলাম কিংবা ন্যাটোর সঙ্গে রাশিয়ার ইউরোপজুড়ে যুদ্ধ হোক, তেমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তিনি তৈরি করতে চান না। এদিকে পশ্চিমাদের কাছে আরও অস্ত্র সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে আরও অস্ত্র পাঠানো হলে কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে ক্রেমলিন। খবর বিবিসি, রয়টার্স ও দ্য গার্ডিয়ানের।
যুদ্ধ চায় না জার্মানি : জার্মানির একটি স্থানীয় সংবাদপত্রে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শুলজ বলেন, ইউক্রেন তার মিত্র দেশগুলোর কাছে বারবার যুদ্ধবিমান চেয়ে আসছে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, যুদ্ধের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য তাদের যুদ্ধবিমান প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা যুদ্ধবিমান সরবরাহের ব্যাপারে আগামী বৃহস্পতিবার ‘খুব সতর্কতার সঙ্গে’ কিয়েভের সঙ্গে আলোচনা করবে। জার্মানির সংবাদপত্র ট্যাগেসপিগেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওলাফ শুলজ বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য জার্মানির তৈরি লেপার্ড-২ ট্যাঙ্ক সরবরাহ করা, যুদ্ধবিমান নয়। আমরা শুধু ট্যাঙ্ক পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শুলজ আরও বলেছেন, ন্যাটো রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয়, এ ধরনের যুদ্ধ ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়ুক, তা আমরা কখনোই চাইব না। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার নিয়মিত কথা হয় বলেও জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর। তিনি বলেছেন, আমাদের পরস্পরের সঙ্গে আরও বেশি কথা বলা দরকার। একই সঙ্গে তিনি স্মরণ করে দিয়েছেন যে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। রাশিয়া যদি সেনা প্রত্যাহার করে, তবেই কেবল এ পরিস্থিতির সমাধান হবে।
আরও দ্রুত অস্ত্র চান জেলেনস্কি : ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলছেন, রাশিয়াকে মোকাবিলায় ইউক্রেনের দ্রুত আরও অস্ত্রের প্রয়োজন। তিনি বলেছেন, পূর্বাঞ্চলীয় দোনেতস্ক অঞ্চলে রাশিয়ান বাহিনীর ক্রমাগত আক্রমণের ফলে সৃষ্ট ‘খুব কঠিন’ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইউক্রেনকে দ্রুত নতুন অস্ত্র সরবরাহ করা প্রয়োজন।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার রাতে ভিডিও ভাষণে কথা বলেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। সেখানে তিনি বলেন, পরিস্থিতি খুবই কঠিন। বাখমুত, ভুহলেদার এবং দোনেতস্ক অঞ্চলের অন্যান্য সেক্টরে ক্রমাগত রাশিয়ান হামলা হচ্ছে। আমাদের প্রতিরক্ষা শক্তি ভেঙে দিতে সেখানে ক্রমাগত চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, রাশিয়া দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধ বজায় রেখে আমাদের বাহিনীকে শেষ করে ফেলতে চায়। তাই আমাদের সময়কে কাজে লাগাতে হবে। আমাদের পদক্ষেপকে গতিশীল করতে হবে, সরবরাহের গতি বাড়াতে হবে এবং ইউক্রেনের জন্য নতুন অস্ত্রের দ্বার উন্মুক্ত করতে হবে।
ক্রেমলিনের হুঁশিয়ারি : এদিকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্র পেসকভ হুঁশিয়ার করেছেন, ইউক্রেনকে যদি পশ্চিমারা আরও অস্ত্র দেয়, তাহলে উত্তেজনা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।