দূষিত শহরের তালিকায় ফের প্রথম স্থানে এসেছে ঢাকা। এ নিয়ে কয়েকদিন টানা দূষিত অস্বাস্থ্যকর রাজধানীর শীর্ষে অবস্থান করছে রাজধানী ঢাকা। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিজুড়ে বিশুদ্ধ বাতাসের দেখা পায়নি এই নগরীর বাসিন্দারা।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ২৬৩ রেকর্ড করা হয়েছে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, যার স্কোর ১৯০। তৃতীয় কাজাখস্তানের আস্তানা (১৮৯), চতুর্থ ভিয়েতনামের হ্যানয় (১৮৮), পঞ্চম চীনের উহান (১৮১), ষষ্ঠ ভারতের মুম্বাই (১৭০), সপ্তম নেপালের কাঠমান্ডু (১৬৫)।
একিউআই সূচক অনুসারে, বায়ুদূষণের মাত্রা ০ থেকে ৫০ পিএম২.৫ হলে সেটি ভালো, ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়, ১০১ থেকে ১৫০ বিশেষ শ্রেণির জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর, ২০১ থেকে ৩০০ খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০০-এর বেশি হলে তা মানবস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক বলে বিবেচিত হয়।
ঢাকার বাতাসে দূষণে মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়ন্ত্রণহীন ধুলা, যানবাহনের ধোঁয়া ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির অবাধ চলাচল, মোটরসাইকেলসহ ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যার মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি, ইটভাটার ধোঁয়া, সড়কের নিয়ন্ত্রণহীন খোঁড়াখুঁড়ি, অবকাঠামো ও মেগা প্রজেক্টের নির্মাণযজ্ঞ, শিল্পকারখানার ধোঁয়া ও বর্জ্য, কঠিন বর্জ্যের অব্যবস্থাপনা ও বর্জ্য পোড়ানো প্রভৃতি।
এছাড়া ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার জলাভূমি ভরাট এবং সবুজ এলাকা ও সবুজায়ন কমে যাওয়া, নিয়ন্ত্রণহীন অবকাঠামো ও ভবন নির্মাণ, নগর ও পরিবেশের ভারবহন ক্ষমতার মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যা, অবকাঠামো ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, পার্ক-উদ্যান-খেলার মাঠে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করে দিয়ে কংক্রিটনির্ভর উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ, যানবাহনের নিয়ন্ত্রণহীন গতি প্রভৃতি কারণে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণহীন মাত্রায় চলে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
তথ্য বলছে, ২০২০ সালের নভেম্বরে ঢাকায় দৈনিক বায়ুদূষণের মাত্রা ছিল গড়ে ১৬৩ দশমিক ২২ পিএম২.৫। পরের মাসে তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ২৩১ দশমিক ৬৭। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে রাজধানীতে বায়ুদূষণের মাত্রা ছিল আগের কয়েক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। ওই মাসে দৈনিক গড় বায়ুদূষণ দাঁড়িয়েছিল ২৬১ দশমিক ৫৪ পিএম২.৫। ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে দূষণের পরিমাণ ছিল ২৩৯ দশমিক ৬৪ এবং মার্চে ২১১ দশমিক ৪১। ২০২২ সালের শেষ থেকে দূষণের মাত্রা অব্যাহতভাবে বাড়ছে।