পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, কারারুদ্ধ ইমরান খানের একটি চিঠিকে কেন্দ্র করে শোরগোল উঠেছে রাজনীতিতে। সম্প্রতি তিনি জেলে বসে সেনাপ্রধান জেনারেল অসিম মুনিরকে ওই চিঠি লিখেছেন। কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর জনগণ ও রাজনীতি বিষয়ক উপেদষ্টা রানা সানাউল্লাহ বলেছেন, ইমরান খান সেনাবাহিনী ও জনগণের মধ্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছেন। তিনি যদি রাজনীতিতে যুক্ত থাকতে চান, তাহলে পার্লামেন্টে আসা উচিত। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ। এতে বলা হয় পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরানের চিঠির বিষয়ে রানা সানাউল্লাহ প্রশ্ন তুলেছেন- এসব চিঠি কোথা থেকে আসছে? তিনি জিও নিউজের ‘আজ শাহজেব খানজাদা কে সাথ’ প্রোগ্রামে এসব প্রশ্ন তোলেন।
এর আগে ইমরান খানের আইনজীবী ফয়সাল চৌধুরী আদিয়ালা জেলের বাইরে সাংবাদিকদের বলেছেন, সেনাপ্রধানের কাছে ৬টি দফা দিয়ে চিঠি লিখেছেন ইমরান। এতে প্রথম দফায় বলা হয়েছে, পাকিস্তানে যে নির্বাচন হয়েছে তাতে ব্যাপকভাবে জালিয়াতি হয়েছে। যারা এই নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন তার মধ্যে অনেকে অর্থপাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত। দ্বিতীয় দফায় সংবিধানের ২৬তম সংশোধন, আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরা হয়েছে। তৃতীয় দফায় তিনি আল কাদির ট্রাস্ট মামলার রায়কে উদ্ধৃত করেছেন। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তল্লাশি চালানো এবং পিটিআইকর্মীদের বিরুদ্ধে শক্তি ব্যবহারের বিষয় তুলে ধরা হয়েছে চার নম্বর দফায়। পাঁচ নম্বর দফায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভূমিকার দিকে দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। এতে সেনাপ্রধানকে নীতি পরিবর্তনের আহ্বান জানান।
বিচারক নিয়োগের বিষয়ে কথা বলেছেন রানা সানাউল্লাহ। তিনজন বিচারককে স্থানান্তর করা অসাংবিধানিক ছিল কিনা- এ বিষয়ে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন। সানাউল্লাহ বলেন, অনুচ্ছেদ ২০০ অথবা ২৬তম সংশোধনী কি সংবিধানের অংশ নয়? যদি আমরা প্রশ্ন করা শুরু করি, তাহলে বিচারকদের চিঠি নিয়েও গুরুতর উদ্বেগ দেখা দেবে। বিচার বিভাগের ইস্যুতে পিটিআইয়ের অবস্থান নিয়ে আরো সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, এই দলটি বিচারপতি বাবর সাত্তার ও তারিক জাহাঙ্গীরকে নিয়োগের শক্ত বিরোধিতা করেছিল। যদি প্রধান বিচারপতি ও বিচারপতিরা ভুল হতেন, তাহলে কে লিখলো যে ওই চিঠি সঠিক? গত সপ্তাহে সিন্ধু, বেলুচিস্তান ও লাহোর থেকে তিনজন বিচারককে স্থানান্তর করে পাঠানো হয়েছে ইসলামাবাদ হাই কোর্টে। এর ফলে আইনি কাঠামো নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। বদলি করা ওই বিচারকরা হলেন লাহোর হাইকোর্টের বিচারপতি সরফরাজ ডোগার, সিন্ধু হাইকোর্টের বিচারপতি খাদিম হুসেইন সুমরু ও বেলুচিস্তান হাই কোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ আসিফ। ওদিকে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি ইয়াহিয়া আফ্রিদি বিচারকদের বদলি করাকে সাংবিধানিক এবং ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন।