মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র পৌঁছেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। স্থানীয় সময় রোববার বিকালে ওয়াশিংটন পৌঁছেছেন তিনি।
মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন ও আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন এই দুই নেতা।
বৈঠকে গাজা উপত্যকা নিয়ে মার্কিন-ইসরাইলের পরিকল্পনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে অনেক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বৈঠকের মাধ্যমে হামাস নির্মূলের নতুন ফন্দি আঁটছেন নেতানিয়াহু। নিউইয়র্ক টাইমস, টাইমস অব ইসরাইল, সিএনএন।
টাইমস অব ইসরাইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওয়ানা হওয়ার আগে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে কী কী বিষয়ে আলোচনা হতে পারে তার ধারণা দেন।
তিনি বলেছেন, গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের শাসনের অবসান এবং ইসরাইলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন প্রধান লক্ষ্য। শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে আমরা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির বলয় সম্প্রসারিত করব এবং গাজার সংকট সমাধানের একটি কার্যকর পথ বের করব। ট্রাম্পের সঙ্গে নেতানিয়াহু একটি নতুন মার্কিন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করবেন। যার মূল লক্ষ্য গাজার জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমানো।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন কৌশল অনুযায়ী, গাজা থেকে ব্যাপকভাবে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নেওয়া গেলে হামাস শাসনের অবসান ঘটানো সহজ হবে। এটি ইসরাইলের নিরাপত্তার জন্য দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক হতে পারে। তবে এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে মানবাধিকার সংগঠনগুলো একে দমনপীড়ন এবং জোরপূর্বক স্থানান্তরের কৌশল হিসাবে দেখছে।
নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তার আলোচনায় মূলত ৩টি বিষয় প্রাধান্য পাবে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি। নেতানিয়াহু আরও বলেছেন, আমরা এমন একটি মধ্যপ্রাচ্য গড়তে চাই, যেখানে ইসরাইলের নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকবে এবং সন্ত্রাসবাদ শিকড় গাড়তে পারবে না।
নেতানিয়াহু বলেছেন, শক্তির মাধ্যমে আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠা করব। গাজার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই আমাদের নৈতিক কর্তব্য। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর বৈঠকের পর গাজায় সামরিক অভিযানের মাত্রা আরও তীব্র হতে পারে। ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন পরিকল্পনা আরব বিশ্বে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে।
বিশেষ করে, সৌদি আরব ও কাতার যদি ফিলিস্তিনের পক্ষে কঠোর অবস্থান নেয় তবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সহজ হবে না। তবে নেতানিয়াহু আশাবাদী, আরব দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে এবং শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে আমরা মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ নতুনভাবে গড়তে পারব। প্রসঙ্গত, নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের বৈঠক শুধু একটি কূটনৈতিক আলোচনা নয়, বরং এটি গাজার ভবিষ্যতের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে।
নেতানিয়াহুর ভাষায়, আমরা শান্তির বলয় সম্প্রসারিত করতে যাচ্ছি। গাজা আমাদের নিয়ন্ত্রণে আসবেই। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই আলোচনার ফলে গাজায় দীর্ঘস্থায়ী দখলদারিত্ব এবং জনসংখ্যা পরিবর্তনের চেষ্টা হতে পারে। যা শুধু ফিলিস্তিন নয়, গোটা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে বদলে দিতে পারে।