ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার অংশ হিসেবে দেশটিতে মার্কিন সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনা নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের মাধ্যমে গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে হামলার অভিযোগকে ‘সম্পূর্ণ সাজানো’ বলে উল্লেখ করেছেন জেলেনস্কি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনে মার্কিন সেনাদের উপস্থিতি কিয়েভের নিরাপত্তার জন্য এক বিশাল শক্তি হিসেবে কাজ করবে। অবশ্যই আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং পশ্চিমা জোটের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করছি। আমরা এটি চাই। এটি হবে নিরাপত্তা নিশ্চয়তার জন্য একটি শক্তিশালী অবস্থান।
এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প গত রবিবার বলেছিলেন, যুদ্ধ বন্ধের জন্য তারা ‘খুব কাছাকাছি’ অবস্থানে রয়েছেন। তবে ভূখণ্ডগত কিছু জটিল অমীমাংসিত রয়ে গেছে। ট্রাম্প বলেন, চুক্তির পথে তারা ৯৫ শতাংশ এগিয়ে গেছেন এবং তিনি আশা করেন মার্কিন সমর্থনে ইউরোপীয় দেশগুলো এই প্রচেষ্টার বড় অংশ গ্রহণ করবে। তবে মার্কিন সেনা পাঠানোর বিষয়ে হোয়াইট হাউজ কোনো মন্তব্য করেনি।
রাশিয়া সম্প্রতি অভিযোগ করেছে, ইউক্রেন ৯১টি দূরপাল্লার ড্রোন দিয়ে পুতিনের একটি বাসভবনে হামলা চালিয়েছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ একে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং পাল্টা হামলার হুমকি দিয়েছেন।
জেলেনস্কি এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এই গল্পটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। ইউক্রেনের ওপর হামলা এবং শান্তি আলোচনা এড়ানোর অজুহাত হিসেবে রাশিয়া এই মিথ্যা প্রচার করছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রও জানিয়েছে, পুতিনের বাসভবনে হামলার দাবির পক্ষে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
শান্তি আলোচনা নিয়ে জেলেনস্কি জানান, তিনি পুতিনের সঙ্গে যেকোনও ফরম্যাটে দেখা করতে প্রস্তুত। অন্যদিকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কথিত এই হামলার পর তাদের আলোচনার অবস্থান আরও কঠোর হবে। ক্রেমলিন শান্তি আলোচনা থেকে সরে না দাঁড়ালেও উপযুক্ত প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক এক বিবৃতিতে বলেন, মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চয়তার মাধ্যমে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই শান্তি অর্জন সম্ভব হতে পারে। তিনি দুই দেশের সীমানায় মার্কিন সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনার কথাও ইঙ্গিত করেন।
কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়লেও রণক্ষেত্রে হামলা থামেনি। মঙ্গলবার রাশিয়ার ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের ওডেসা অঞ্চলের বন্দর অবকাঠামো ও বেসামরিক জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেনের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই কৃষ্ণসাগরীয় অঞ্চলে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে উভয় পক্ষের মধ্যে নৌ-যুদ্ধ আরও তীব্র হয়েছে।