Image description
 

আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইয়েমেন থেকে আমিরাতি সেনাদের সরিয়ে নিতে বলেছে রিয়াদ। মঙ্গলবার ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় সমুদ্রবন্দর মুকাল্লাতে আমিরাত থেকে আসা দু’টি জাহাজে ‘সীমিত মাত্রার হামলা’ চালানোর পর আবুধাবির উদ্দেশে এ আল্টিমেটাম দিল সৌদি।

 

ইয়েমেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজনৈতিক গোষ্ঠী সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল (এসটিসি)-এর সঙ্গে আমিরাতের আঁতাত নিয়ে সৌদি ও আমিরাতের মধ্যে গত বেশ কিছুদিন ধরে টানাপোড়েন চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার জাহাজ দু’টি লক্ষ্য করে হামলা চালায় সৌদি বিমান বাহিনী।

হামলায় জাহাজ দু’টির অল্প ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে হতাহতের কোনও ঘটনাও ঘটেনি।

 

মুকাল্লায় বিমান হামলার পর সৌদির সরকারি বার্তাসংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ)-কে সৌদি-ইয়েমেন প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিল জোটের মুখপাত্র মেজর জেনারেল তুর্কি আল মালিকি বলেন, “আমরা গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়েছিলাম যে দুটি অস্ত্র-গোলাবারুদবাহী জাহাজ আমিরাতের ফুজাইরা বিমানবন্দর থেকে মুকাল্লা এসেছে। আমরা আরও জানতে পারি যে, বিচ্ছিন্নতাবাদী এসটিসিকে সহায়তার জন্য আমিরাত এই অস্ত্র পাঠিয়েছে।”

 

তিনি বলেন, “আমরা ইয়েমেনের ভৌগলিক অখণ্ডতা বজায় রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই কারণে আমরা চাই, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইয়েমেন থেকে আমিরাত সব সেনাকে প্রত্যাহার করে নিক।

জানা গেছে, ইয়েমেনের প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিলের প্রধান রাশেদ আল আলিমিও মুকাল্লায় সৌদির বিমান অভিযানের পর আমিরাতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত প্রতিরক্ষা চুক্তি বাতিল করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “মিত্রতার আড়ালে আমিরাত ইয়েমেনের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব উসকে দিচ্ছে এবং আমরা জানতে পেরেছি যে, এসটিসিকে তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের জন্য উসকানি দিচ্ছে।”

২০১৪ সালে হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠী রাজধানী সানা দখল করার পর ইয়েমেনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদী সৌদিতে আশ্রয় নেন। হুথি বিদ্রোহীদের দমন এবং মনসুর আল হাদীকে ফের ক্ষমতায় ফেরাতে নিজেদের, আমিরাতের এবং ইয়েমেনের সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে একটি প্রতিরক্ষা জোট গঠন করে সৌদি।

২০১৫ সাল থেকে হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে এই জোট। তবে অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত হুথি গোষ্ঠীকে সেভাবে দুর্বল করা সম্ভব হয়নি। এদিকে ২০১৯ সালে জোট থেকে নিজেদের সেনাসংখ্যা কমিয়ে আনে আমিরাত, কিন্তু জোটের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখে।

এদিকে ২০১৫ সালে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের অভিযানের সময় মিত্র হিসেবে জোটে যোগ দিয়েছিল এসটিসি। তবে পরে তারা জোট থেকে সরে যায়।

এরপর ২০২২ সালে ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ হাদ্রামৌতসহ দক্ষিণের বিস্তৃত এলাকা দখল করে এসটিসি। সম্প্রতি আমিরাতের সঙ্গে তাদের মিত্রতা হয়েছে এবং আমিরাত অস্ত্র-রসদ দিয়ে তাদের সহযোগিতা করছে বলে জানা গেছে।

সৌদি প্রেস এজেন্সিকে সৌদি জোটের মুখপাত্র বলেন, “ইয়েমেনের বৈধ সরকার হলো প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিল। এর বাইরে আর কোনও দল বা গোষ্ঠীকে আমরা বৈধ বলে মেনে নেব না; আর সেসব গোষ্ঠীকে যদি বাইরের কোনও দেশ সহায়তা করে, তাহলে নিশ্চিতভাবেই আমরা তা প্রতিহত করব।”