Image description
 
 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি দেশটির কংগ্রেসে একটি বার্ষিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যেখানে চীন ও ভারতের মধ্যকার সীমান্ত বিরোধ এবং বেইজিংয়ের ভূ-রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, চীন ভারতের অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা করছে এবং একে চীনা নেতাদের ‘মূল লক্ষ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অরুণাচল ছাড়াও তাইওয়ান এবং দক্ষিণ চীন সাগরের বিশাল অংশে নিজেদের নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা বেইজিংয়ের দীর্ঘমেয়াদী কৌশলের অংশ। ২০৪৯ সালের মধ্যে ‘চীনা জাতির মহান পুনর্জাগরণ’ অর্জনের যে লক্ষ্য বেইজিং নির্ধারণ করেছে, তার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে এই অঞ্চলগুলোর নিয়ন্ত্রণকে দেখা হচ্ছে।

 

পেন্টাগনের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহান পুনর্জাগরণের লক্ষ্য বাস্তবায়নে তাইওয়ানকে চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে একীভূত করাকে বেইজিং একটি ‘স্বাভাবিক প্রয়োজনীয়তা’ বলে মনে করে। এই নতুন রূপকল্প অনুযায়ী, চীন বৈশ্বিক পর্যায়ে নিজেদের অবস্থান আরও সুসংহত করতে চায়। এর অংশ হিসেবে তারা এমন একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েছে, যারা বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে যেকোনো অভিযানে জয়লাভ করতে সক্ষম হবে। মূলত নিজেদের ভৌগোলিক অখণ্ডতা, জাতীয় নিরাপত্তা এবং উন্নয়নমূলক স্বার্থ রক্ষার্থেই চীন এই সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিচ্ছে।

প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে পাকিস্তান ও চীনের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান সামরিক সম্পর্কের বিষয়টিও বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে। বেইজিং ও ইসলামাবাদ বর্তমানে যৌথভাবে জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান তৈরি করছে এবং পাকিস্তানই একমাত্র দেশ যারা চীনের কাছ থেকে উন্নত জে-১০ যুদ্ধবিমান কেনার সুযোগ পাচ্ছে। এ ছাড়া চীন পাকিস্তানকে ড্রোনসহ বিভিন্ন আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ৩ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে পাকিস্তানের কাছে আটটি ইউয়ান-ক্লাস সাবমেরিন বিক্রির চুক্তি। একই সঙ্গে প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি ভবিষ্যতে পাকিস্তানে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনাও বিবেচনা করছে।