গাজা উপত্যকায় সাময়িকভাবে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি কমলেও পরিস্থিতি এখনো অত্যন্ত নাজুক বলে সতর্ক করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি জানান, গাজার মোট জনসংখ্যার ৭৫ শতাংশেরও বেশি এখনও তীব্র খাদ্য সংকট ও পুষ্টিহীনতার হুমকির মুখে রয়েছে। খবর আনাদোলুর
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে গুতেরেস বলেন, ‘দুর্ভিক্ষ কিছুটা পেছনে ঠেলতে সক্ষম হয়েছি। আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে এখন বেঁচে থাকার মতো খাদ্য পৌঁছাচ্ছে, তবে এই অগ্রগতি অত্যন্ত ভঙ্গুর।’ তিনি জানান, গাজার ১৬ লাখ মানুষ মোট জনসংখ্যার তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং মারাত্মক অপুষ্টির ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘গাজার অর্ধেকেরও বেশি অঞ্চল এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে। ফলে সেখানে কৃষিজমি ও বসতিগুলো দুর্গম হয়ে পড়েছে। হামলা ও সংঘর্ষ অব্যাহত থাকায় বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে এবং মানবিক কর্মীরা জীবন ঝুঁকির মধ্যে কাজ করছেন।’
গুতেরেস আবারও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের আরও ক্রসিং দরকার, জরুরি সামগ্রী প্রবেশে বাধা তুলে নিতে হবে, প্রশাসনিক জটিলতা কমাতে হবে, গাজার ভেতরে নিরাপদ চলাচলের পথ তৈরি করতে হবে এবং এনজিওসহ মানবিক সংস্থাগুলোর প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে।’
শুক্রবার প্রকাশিত ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) রিপোর্টেও বলা হয়, গাজায় সাময়িকভাবে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি কমলেও সার্বিক পরিস্থিতি এখনো সংকটজনক। রিপোর্টে জানানো হয়, হামলা কমা এবং মানবিক ও বাণিজ্যিক খাদ্য সরবরাহ বাড়ায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা হ্রাস পেয়েছে, কিন্তু পুরো অঞ্চল এখনো বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে।
গুতেরেস গাজা যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ শুরুতে ইসরায়েলের অনীহা নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল চূড়ান্ত নিহত একজন জিম্মির লাশ ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপে যাবে না বলে জানালেও এতে অগ্রগতি থেমে থাকা উচিত নয়।
পশ্চিম তীরের পরিস্থিতি নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব। তিনি বলেন, ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী গোষ্ঠীর হামলা, জমি দখল, ঘরবাড়ি ধ্বংস এবং চলাচলে বিধিনিষেধের কারণে দখলকৃত এলাকায় পরিস্থিতি দ্রুত বিপর্যস্ত হচ্ছে। উত্তরের পশ্চিম তীর থেকে সেনা অভিযানের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ।