Image description
 

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, তুর্কি রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গভীরতর সংহতির লক্ষ্যে প্রণীত তুরস্কের নতুন কৌশলগত পরিকল্পনার মূল ভিত্তি হলো অর্থনৈতিক কৌশল। সোমবার আঙ্কারায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে “তুর্কি বিশ্ব ভিশন ডকুমেন্ট” উন্মোচনকালে তিনি এ কথা বলেন।

 

ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একে পার্টি) প্রণীত এই নথিটি তুর্কিভাষী দেশগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের বৃহত্তর উদ্যোগের অংশ।

 
 

এরদোয়ান বলেন, “অর্থনৈতিক খাতের কৌশলগুলোই আমাদের ভিশন ডকুমেন্টের মেরুদণ্ড। বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়ন এবং একটি অভিন্ন বাজার গঠনের লক্ষ্য আমাদের বিদ্যমান অর্থনৈতিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।”

তিনি জানান, এই কৌশল তুর্কি রাষ্ট্রগুলোর সংগঠন (ওটিএস)-এর আওতায় চলমান সহযোগিতার ওপর ভিত্তি করে তৈরি এবং এতে পরিবহন, জ্বালানি নিরাপত্তা, শিক্ষা, যুবনীতি ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এরদোয়ান বলেন, মধ্যম মেয়াদে তুর্কি বিশ্বভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য ৬০ বিলিয়ন ডলারে এবং দীর্ঘমেয়াদে ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। অবকাঠামো, লজিস্টিকস, জ্বালানি করিডোর, ডিজিটাল অবকাঠামো ও বাণিজ্য সম্প্রসারণ এই পরিকল্পনার অগ্রাধিকার।

“জ্বালানি করিডোর, লজিস্টিক রুট ও ডিজিটাল অবকাঠামোর পারস্পরিক পরিপূরক উন্নয়ন তুর্কি বিশ্বকে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে একটি উদীয়মান শক্তিতে রূপান্তরিত করবে,” বলেন এরদোয়ান।

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ২০০৯ সালের নাখচিভান চুক্তির মাধ্যমে তুর্কি কাউন্সিল গঠনের মধ্য দিয়ে সহযোগিতার নতুন অধ্যায় শুরু হয় এবং ২০২১ সালের ইস্তাম্বুল শীর্ষ সম্মেলনে তা তুর্কি রাষ্ট্রগুলোর সংগঠনে রূপ নেয়, যেখানে “তুর্কি ওয়ার্ল্ড ভিশন ২০৪০” কাঠামো গৃহীত হয়।

এরদোয়ান বলেন, শিক্ষা, বাণিজ্য, নিরাপত্তা, জ্বালানি ও সংস্কৃতিসহ সব ক্ষেত্রে গত ৩৪ বছরে সম্পর্ক অভূতপূর্বভাবে জোরদার হয়েছে। টিকা, ইউটিবি, মারিফ ফাউন্ডেশন, ধর্ম বিষয়ক অধিদপ্তর এবং ইউনুস এমরে ইনস্টিটিউট এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

নতুন ভিশন ডকুমেন্টে ছয়টি অধ্যায় ও ৬১টি উপশিরোনাম রয়েছে, যেখানে অর্থনৈতিক সংহতি, জ্বালানি নিরাপত্তা, পরিবহন নেটওয়ার্ক, শিক্ষা ও যুবনীতির ওপর বিস্তারিত প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। মধ্য করিডোর, বাকু–নাখচিভান রুট ও কাস্পিয়ান পারাপারের পথগুলোকে সমন্বিত ব্যবস্থায় রূপ দেওয়ার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া তুর্কি ওয়ার্ল্ড প্রোডাক্টিভিটি এজেন্সি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডিজিটাল রূপান্তর কেন্দ্র, পরিবেশ তহবিল, জরুরি সাড়া ও স্বাস্থ্য সহায়তা ইউনিট এবং একটি অভিন্ন ভাষা প্ল্যাটফর্ম গঠনের প্রস্তাবও তুলে ধরা হয়েছে।

এরদোয়ান বলেন, শিল্প, প্রযুক্তি, কৃষি, জ্বালানি ও লজিস্টিকসে তুরস্কের অভিজ্ঞতা এই কৌশল বাস্তবায়নে সহায়ক হবে এবং তুর্কি রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বহুমাত্রিক সহযোগিতা আরও শক্তিশালী হবে।

সূত্র: ডেইলি সাবাহ