ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের মিসরে স্থানান্তরের লক্ষ্যে রাফাহ ক্রসিং একদিক থেকে খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির এই সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মুসলিম ও আরব বিশ্বের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
এর আগে বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ইসরায়েল এক বিবৃতিতে ঘোষণা দেয়, দেশটি গাজা উপত্যকা থেকে বাসিন্দাদের পালানোর জন্য একতরফাভাবে রাফাহ ক্রসিং খুলে দেবে। এরপরই পাকিস্তান, মিসর, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, সৌদি আরব ও কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এছাড়া ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে মিসর। বরং কায়রো অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড মুক্ত করে দিতে উভয় দিকের অবরোধ তুলে নেওয়ার ওপর জোর দিয়েছে।
এদিকে, সমালোচকরা ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তে ফিলিস্তিনিরা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা করছেন। আর মিসর ইসরায়েলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গৃহীত শান্তি পরিকল্পনার শর্তাবলী মেনে চলার ওপর জোর দিয়েছে। ওই পরিকল্পনায় পূর্ণ মানবিক প্রবেশাধিকারের বিধান রয়েছে।
গাজার বাসিন্দাদের জন্য রাফাহ ক্রসিংই হলো বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ পথ, যেখানে ইসরায়েলের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে নেই। তবে কয়েক মাস ধেরে এই ক্রসিং বন্ধ আছে। ফলে গাজাবাসীর জীবন রক্ষাকারী ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ আছে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ফিলিস্তিনি জনগণকে তাদের ভূমি থেকে বিতাড়িত করার যেকোনো প্রচেষ্টাকে সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করেছেন। পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনার পূর্ণ আনুগত্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। ওই পরিকল্পনায় রাফাহ ক্রসিং উভয় দিকে উন্মুক্ত রাখা, জনগণের চলাচলের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং গাজা উপত্যকার যে কোনও বাসিন্দাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা থেকে বিরত থাকা, গাজায় স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার, নিজেদের ভূমিতে থাকার এবং মাতৃভূমি নির্মাণে ফিলিস্তিনিদের অংশগ্রহণের জন্য সঠিক পরিস্থিতি তৈরি করার কথা বলা আছে।
অন্যদিকে, এই অঞ্চলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতির ফের প্রশংসা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। তাঁরা কোনো ধরনের বিলম্ব ও বাধা ছাড়াই ‘ট্রাম্প প্লান’ পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। পাশাপাশি পরিকল্পনা অনুযায়ী নিরাপত্তা ও শান্তি আনার মাধ্যমে এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতার ভিত্তি গড়ায়ও জোর দেন তাঁরা।