দোষী সাব্যস্ত যৌন অপরাধী জেফরি এপস্টিনের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে সম্প্রতি ‘প্রিন্স’ উপাধি হারিয়েছেন ব্রিটিশ রাজপরিবারের অন্যতম সদস্য রাজা চার্লসের ভাই অ্যান্ড্রু। উইন্ডসরের রয়্যাল লজ প্রাসাদও ছাড়তে যাচ্ছেন তিনি। এখন থেকে তিনি শুধু অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইন্ডসর নামে পরিচিত হবেন। কিন্তু এরপরেও বিতর্ক যেন তার পিছু ছাড়ছে না।
এবার ব্রিটিশ রাজপরিবারের ইতিহাসবিদ অ্যান্ড্রু লাউনি অভিযোগ করেছেন, রাজপদচ্যুত সাবেক প্রিন্স অ্যান্ড্রু একবার থাইল্যান্ডে রাষ্ট্রীয় সফরের সময় বিলাসবহুল হোটেলে ৪০ জন যৌনকর্মীকে নিয়ে গিয়েছিলেন। এছাড়া ২০০০ সালের শুরুর দিকে মধ্যবয়সী সঙ্কট চলাকালীন সরকারি অর্থে বিদেশ সফরের আড়ালে একাধিক বিলাসবহুল ছুটি কাটিয়েছেন। তিনি করদাতার অর্থে অর্থায়িত ট্রেড এনভয় হিসেবে বিদেশ সফরের সুযোগ নিয়েছিলেন।
ডেইলি মেইলের পডকাস্টে লাউনি বলেন, অ্যান্ড্রু প্রতিটি সফরে দুই সপ্তাহের ব্যক্তিগত সময় রাখতেন, যার ফলে তার বিলাসবহুল ছুটির খরচ বহন করতেন করদাতারা।
লাউনির দাবি, একবার থাইল্যান্ড সফরে রাজা’র জন্মদিন উদ্যাপন উপলক্ষে যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি হিসেবে গিয়ে অ্যান্ড্রু দূতাবাসে না থেকে পাঁচ তারকা হোটেলে ওঠেন। তিনি অভিযোগ করেন, চার দিনে ওই হোটেলে ৪০ জন যৌনকর্মী আনা হয়েছিল, যা কূটনীতিক ও অন্যদের সহায়তায় ঘটেছিল। এই তথ্য একাধিক সূত্র, এমনকি থাইল্যান্ডের রাজপরিবারের এক সদস্যের মাধ্যমেও যাচাই করা হয়েছে বলে দাবি করেন লাউনি।
সাবেক ব্রিটিশ কূটনীতিক ইয়ান প্রাউড জানান, অ্যান্ড্রুর নারীসঙ্গের বিষয়টি তখন দূতাবাসের অভ্যন্তরে খোলামেলাভাবে জানা ছিল। তিনি সবসময় ব্যাংককের একটি নির্দিষ্ট বিলাসবহুল হোটেলেই থাকতেন, কারণ সেখানে নিচতলায় তার পছন্দের নাইটক্লাব ছিল।
এই ঘটনার ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সকালে তাকে যুক্তরাজ্যের ‘অফিশিয়াল রোল অব দ্য পিয়ারেজ’ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা তার রাজকীয় উপাধি ও মর্যাদা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহারের একটি বড় ধাপ।
এদিকে জেফ্রি এপস্টিন কেলেঙ্কারির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বিতর্কের পর বাকিংহাম প্যালেস নিশ্চিত করেছে যে, অ্যান্ড্রু উইনডসর আবাস ছাড়তে সম্মত হয়েছেন। প্যালেসের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রাজা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর স্টাইল, উপাধি ও সম্মান প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এখন থেকে তিনি অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইনডসর নামে পরিচিত হবেন।