কাজের চাপ কমানোর উদ্দেশ্যে ১০ জন রোগীকে হত্যা এবং আরও ২৭ জনকে হত্যার চেষ্টার দায়ে জার্মানির এক প্যালিয়েটিভ কেয়ার নার্সকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আখেনের আদালত বুধবার (৫ নভেম্বর) এই রায় ঘোষণা করে। খবর আরব নিউজের।
৪৪ বছর বয়সী ওই নার্সকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের মে মাসের মধ্যে আখেনের কাছে ভুয়েরসেলেন শহরের একটি হাসপাতালে এসব হত্যাকাণ্ডের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আদালত জানায়, অপরাধের ভয়াবহতা ও নিষ্ঠুরতার কারণে সাধারণত যাবজ্জীবন সাজাভোগের ১৫ বছর পর প্যারোলের সুযোগ থাকলেও, তার ক্ষেত্রে সেই সুবিধা প্রযোজ্য হবে না।
সরকারি কৌঁসুলিরা অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত নার্স রাতের শিফটে কাজের চাপ কমাতে বয়স্ক রোগীদের চেতনানাশক বা ব্যথানাশকের অতিরিক্ত ডোজ ইনজেকশন দিতেন। তিনি মরফিন ও মিডাজোলাম ব্যবহার করতেন। কৌঁসুলিরা আদালতে বলেন, “অভিযুক্ত নিজেকে রোগীদের জীবন-মৃত্যুর কর্তা মনে করতেন।”
তদন্তে জানা যায়, ওই নার্স পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারে ভুগছিলেন, রোগীদের প্রতি কোনো সহানুভূতি দেখাননি এবং বিচার চলাকালেও অনুশোচনার কোনো লক্ষণ প্রকাশ করেননি। সহকর্মীরা অভিযোগ করেন, তিনি প্রায়ই উদাসীন ও অনুৎসাহিতভাবে কাজ করতেন।
২০০৭ সালে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করার পর বিভিন্ন হাসপাতালে চাকরি করার পর ২০২০ সালে তিনি ভুয়েরসেলেন হাসপাতালে যোগ দেন। ২০২৪ সালের গ্রীষ্মে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কৌঁসুলিদের মতে, আরও কয়েকজন ভুক্তভোগী থাকতে পারেন—সে কারণে একাধিক মরদেহ উত্তোলন করে পুনরায় তদন্ত চলছে, এবং তার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফা বিচারের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, এই ঘটনা জার্মানির কুখ্যাত নার্স নিয়েলস হোয়েগেলের ঘটনার স্মৃতি ফিরিয়ে দিয়েছে। হোয়েগেলকে ২০১৫ সালে ৮৫ জন রোগী হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি আধুনিক জার্মান ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর সিরিয়াল কিলার হিসেবে পরিচিত।