ব্যাঙ্গালোরে প্রেমিকার উদ্দেশে একজন সার্জন লিখেছেন, তোমার জন্যই আমি আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছি। তিনি হলেন সার্জন ডা. মহেন্দ্র রেড্ডি। নিজের স্ত্রী চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কৃতিকা রেড্ডিকে হত্যার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পরপরই প্রেমিকাকে তিনি ওই বার্তা পাঠান। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। পুলিশ বলেছে, অভিযুক্ত সার্জন ডা. মহেন্দ্র রেড্ডি ওই বার্তাটি পাঠিয়েছিলেন একটি ডিজিটাল পেমেন্ট অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে। ফরেনসিক বিশ্লেষণে ডা. রেড্ডির মোবাইল ফোন থেকে এই বার্তাটি উদ্ধার করে পুলিশ। তারা জানায়, ডা. রেড্ডির ওই প্রেমিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং তার বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। তবে পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। ঘটনার ছয় মাস পর মহেন্দ্র রেড্ডিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অভিযোগ অনুযায়ী তিনি নিজের স্ত্রী ডা. কৃতিকা রেড্ডিকে অতিরিক্ত মাত্রায় অ্যানেসথেটিক ওষুধ দিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনা ঘটে গত ২১ এপ্রিল তাদের বাড়িতেই। কৃতিকা অসুস্থ হয়ে পড়লে মহেন্দ্র নিজেই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির প্রতিবেদনে নিহত কৃতিকারের শরীরে ‘প্রোপোফল’ নামের এক শক্তিশালী অ্যানেসথেটিক ওষুধের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়, যা স্পষ্ট করে এটি একটি অপরাধমূলক কাজ। পুলিশ তাদের বাড়ি তল্লাশি করে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ উদ্ধার করে। এর মধ্যে ছিল একটি ক্যানুলা সেট, ইনজেকশন টিউব, আরও কিছু চিকিৎসা সরঞ্জাম।
এ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কৃতিকারের বাবা থানায় অভিযোগ করেন যে, তার জামাতা ইচ্ছাকৃতভাবে তার মেয়েকে হত্যা করেছে। ১৫ অক্টোবর মহেন্দ্রকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ ধারণা করছে, তিনি তার চিকিৎসা জ্ঞানকে ব্যবহার করে স্ত্রীর মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলে দেখানোর চেষ্টা করেন। বেঙ্গালোরের পুলিশ কমিশনার সীমান্ত কুমার সিং জানান, এ পর্যন্ত সংগৃহীত প্রমাণ স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে, স্বামীই এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছেন। তিনিই প্রথমে স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু কিছুই বলেননি। তিনি বলেছিলেন, তার স্ত্রী অসুস্থ ছিলেন এবং চিকিৎসাধীন ছিলেন। এখন আমরা জেনেছি, তাকে কিছু সেডেটিভ ইনজেকশন দেয়া হয়েছিল, যা স্পষ্টভাবে দুষ্ট উদ্দেশ্যের ইঙ্গিত দেয়। এই দম্পতির বিয়ে হয় গত বছরের ২৬ মে। তারা দু’জনেই বেঙ্গালোরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন।