Image description
 

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল আজ (শনিবার) দোহায় আফগান তালেবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে।

 

এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে জিও নিউজ

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আলোচনার মূল লক্ষ্য হবে ‌‘আফগান ভূখণ্ড থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরিচালিত সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদ বন্ধে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ’ এবং ‘পাক-আফগান সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘পাকিস্তান সংঘাত বাড়াতে চায় না, তবে আফগান তালেবান কর্তৃপক্ষকে আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি রক্ষা এবং পাকিস্তানের ন্যায্য নিরাপত্তা উদ্বেগ সমাধানে যাচাইযোগ্য পদক্ষেপ নিতে হবে—বিশেষ করে নিষিদ্ধ সংগঠন টিটিপি ও বিএলএ-র বিরুদ্ধে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাতারের মধ্যস্থতা প্রচেষ্টার প্রশংসা করে আশা প্রকাশ করেছে যে দোহা বৈঠক আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় অবদান রাখবে।

এর আগে আফগান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে জানান, আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মুহাম্মদ ইয়াকুবের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল আজ শনিবার দোহায় পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় অংশ নিচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আজ দোহায় পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।’

 

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পাকিস্তান ও আফগান তালেবান প্রশাসনের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাকিস্তানের অভিযোগ, আফগান ভূখণ্ডে সক্রিয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে তালেবানরা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে, যার ফলে দেশটিতে সীমান্তপারের হামলা বেড়েছে।

গত ১২ অক্টোবর আফগান তালেবান বাহিনী ও ভারত-সমর্থিত নিষিদ্ধ টিটিপি পাকিস্তানের সামরিক চৌকিতে অঘোষিত হামলা চালায়। এর জবাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পাল্টা আক্রমণে ২০০-র বেশি তালেবান ও জঙ্গিকে হত্যা করে বলে জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তর (আইএসপিআর)। সংঘর্ষে পাকিস্তানের ২৩ জন সেনা সদস্য শহিদ হন।

 

এরপর পাকিস্তান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল ও কান্দাহারে সন্ত্রাসীদের ঘাঁটিতে ‘নির্ভুল হামলা’ চালায়, যা সাম্প্রতিক আগ্রাসনের জবাব হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির পর প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, আফগান তালেবান প্রশাসন যদি যুক্তিসঙ্গত শর্তে আলোচনায় আগ্রহী হয়, তবে পাকিস্তান সংলাপে প্রস্তুত।

২০২১ সালে তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে পাকিস্তানে সীমান্তপারের সন্ত্রাসী হামলা বেড়েছে, বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে।

দুই দেশের প্রায় ২,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তে একাধিক প্রবেশপথ রয়েছে, যা দুইপারের জনগণের বাণিজ্য ও যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে সন্ত্রাসবাদের ইস্যুটি পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান উদ্বেগ হিসেবে রয়ে গেছে। দেশটি বারবার আহ্বান জানিয়ে এসেছে, আফগানিস্তান যেন তার ভূখণ্ডকে নিষিদ্ধ সংগঠন টিটিপির মতো গোষ্ঠীর দ্বারা পাকিস্তানে হামলার জন্য ব্যবহৃত হতে না দেয়।