ভাইরাস হলো এক ধরনের অণুজীব যা পোষকদেহের জীবন্ত কোষের মধ্যে বিস্তার ঘটে। বহনকারী প্রাণী বা উদ্ভিদের প্রাণঘাতী অনেক ব্যাধির কারণ এ ভাইরাস। বিশ্বের ১০টি সবচেয়ে ভয়ংকর ভাইরাসের কথা বললে কোভিড-১৯ এবং এইচএমপিভির নাম আসে না।চীন থেকে কোভিড ছড়িয়ে পড়ে। কোভিড খুব সংক্রামক, তবে এর থেকে রোগীর মৃত্যুর হার কম। আসুন বিশ্বের ১০টি সবচেয়ে ভয়ংকর ভাইরাস সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
মারবুর্গ
পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক ভাইরাসের নাম মারবুর্গ ভাইরাস। জার্মানির লান নদীর পাশের শহর মারবুর্গের নামে ভাইরাসটির নামকরণ হলেও এই শহরের সঙ্গে সেটির আসলে কোনো সম্পর্ক নেই। ‘হেমোরেজিক' জ্বর সৃষ্টিকারী এই ভাইরাসের লক্ষণ অনেকটা এবোলার মতোই, তবে এতে আক্রান্তের মৃত্যুর আশঙ্কা ৯০ শতাংশ।
এবোলা
এ ভাইরাসের পাঁচটি ধরন রয়েছে। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ এবং অঞ্চলের নামে এগুলোর নামকরণ করা হয়েছে: জাইরি, সুদান, তাই ফরেস্ট, বুন্ডিবিগিয়ো এবং রোস্টান। বর্তমানে গিনিয়া, সিয়েরা লিওন এবং লাইবেরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে জাইরি ছড়িয়েছিল। আর এটিই এবোলার সবচেয়ে মারাত্মক সংস্করণ, যাতে মৃত্যুর শঙ্কা ৯০ শতাংশ।
হান্তাভাইরাস
হান্তাভাইরাস বিভিন্ন ধরণের ভাইরাসকে বোঝায়। এর নামকরণ করা হয়েছে একটি নদীর নামে। ১৯৫০ সালে কোরিয়ান যুদ্ধের সময় আমেরিকান সৈন্যরা প্রথম হান্তাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল বলে অনুমান করা হয়। এর সংক্রমণে ফুসফুসের রোগ এবং জ্বর হয়। কিডনি বিকল হয়ে যায়।
বার্ড ফ্লু
বার্ড ফ্লুতে মৃত্যুহার ৭০ শতাংশ। এর সংক্রমণ আগে থেকে সংক্রামিত পাখির (যেমন মুরগি) সরাসরি সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে ছড়ায়। এর সংক্রমণের বেশিরভাগ ঘটনা এশিয়ায় দেখা যায়।
লাসা ভাইরাস
নাইজেরিয়ার একজন নার্স লাসা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া প্রথম ব্যক্তি ছিলেন। তাই এর নাম লাসা ভাইরাস রাখা হয়েছে। এটি ইঁদুরের মতো ছোট প্রাণী থেকে ছড়ায়। এর বেশিরভাগ ঘটনা পশ্চিম আফ্রিকায় দেখা গেছে।
জুনিন
এ ভাইরাসে সংক্রমণের ঘটনা আর্জেন্টিনায় দেখা গেছে। এতে রোগীর জ্বর এবং শরীর থেকে রক্তক্ষরণের সমস্যা হয়। রোগীর টিস্যুতে প্রদাহ হয়। তার ত্বক থেকে রক্ত ঝরতে শুরু করে।
ক্রিমিয়া-কঙ্গো জ্বর
ক্রিমিয়া-কঙ্গো জ্বর ভাইরাস টিক্স দ্বারা ছড়ায়। এর লক্ষণগুলি ইবোলা এবং মারবার্গ ভাইরাসের মতো। সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে রোগীর মুখ, মুখ এবং গলা থেকে রক্ত বের হয়।
মাচুপো
এ ভাইরাসে সংক্রমণের ঘটনা বলিভিয়ায় দেখা গেছে। এতে জ্বর এবং শরীর থেকে রক্তক্ষরণের মতো লক্ষণ দেখা যায়। একে ব্ল্যাক টাইফাসও বলা হয়। রোগীর তীব্র জ্বর হয় এবং তার শরীর থেকে দ্রুত রক্ত বের হয়। এ ভাইরাস একজন মানুষ থেকে অন্য মানুষের মধ্যে ছড়াতে পারে। এটি প্রায়শই ইঁদুর ছড়ায়।
ক্যাসানুর বন ভাইরাস
বিজ্ঞানীরা ১৯৫৫ সালে ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে ক্যাসানুর বন ভাইরাস আবিষ্কার করেন। এটি টিক্স দ্বারা ছড়ায়। রোগীর তীব্র জ্বর, মাথাব্যথা এবং পেশীতে ব্যথা হয়। তার শরীর থেকে রক্ত ঝরে।
ডেঙ্গু জ্বর
ডেঙ্গু মশা দ্বারা ছড়ায়। এটি প্রতি বছর ৫০ থেকে ১০০ মিলিয়ন মানুষকে আক্রান্ত করে। চিকিৎসা পেলে রোগীর প্রাণ বাঁচে।