Image description
 

জাতিসংঘের পরমাণু কর্মসূচি বিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএর সঙ্গে সমঝোতা ভেঙে দিল ইরান। পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল রেখেছে। এ কারণে জাতিসংঘের পারমাণবিক সংস্থাকে (আইএইএ) সহযোগিতা করা এখন আর প্রাসঙ্গিক নয় বলে ঘোষণা করেছেন  ইরানের  পররাষ্ট্রমন্ত্রী। 

মন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, ‘আইএইএ’র সঙ্গে আমাদের সহযোগিতার জন্য কায়রো চুক্তি আর প্রাসঙ্গিক নয়।’ তিনি গত মাসে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তির কথা উল্লেখ করেন। এই চুক্তিতে এমন একটি কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছিল, যার মাধ্যমে তেহরান সহযোগিতা স্থগিত করার পর আবারও আইএইএ চাইলে পরিদর্শন ও তদারকি কার্যক্রম শুরু করা যেত। গত জুনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের হামলার পর তাদের পারমাণবিক স্থাপনায় সহযোগিতা করা বন্ধ করে দেয় তেহরান। তবে, ওই চুক্তির গুরুত্ব হারায় যখন বৃটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি যারা ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির স্বাক্ষরকারী ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে। ইরান অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। 

তেহরানে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে আরাঘচি বলেন, ‘তিনটি ইউরোপীয় দেশ মনে করেছিল তাদের হাতে একটি চাপ প্রয়োগের হাতিয়ার আছে। এখন তারা সেই হাতিয়ার ব্যবহার করেছে এবং ফলাফল দেখেছে। এই তিন ইউরোপীয় দেশ নিশ্চিতভাবেই নিজেদের ভূমিকা থেকে সরে এসেছে এবং তাদের সঙ্গে আলোচনার যৌক্তিকতা নেই ।’

তেহরান আইএইএর বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ করেছে। তারা বলেছে, সংস্থাটি পরমাণু অস্ত্র বিস্তাররোধ চুক্তির (এনপিটি) আওতায় দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরাইলের হামলার নিন্দা জানাতে ব্যর্থ হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন রাতে ইরানের রাজধানী তেহরান এবং একাধিক পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছিল ইসরাইলি  যুদ্ধবিমান। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল, ‘অপারেশন রাইজ়িং লায়ন’! ঘটনাচক্রে, ইসরাইলি হামলার দিনকয়েক আগে আইএইএ-র ডিরেক্টর জেনারেল রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি জানিয়েছিলেন, পরমাণু বোমা নির্মাণের উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালাচ্ছে ইরান। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিল পেজ়েকশিয়ান সরকার। ইসরাইলি হামলার ন’দিন পরে ২২ জুন ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্র, ফোরডো, নাতান্‌জ এবং ইসফাহানে হামলা চালিয়েছিল আমেরিকার বি-২ বোমারু বিমান। ফেলা হয় বাঙ্কার ব্লাস্টার সিরিজের সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা জিবিইউ-৫৭। সেই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’। 

সূত্র : আলজাজিরা