Image description

রাশিয়ায় সেনা ক্যাম্পে চাকরি। বাবুর্চি বা ক্লিনারের কাজ। মাসে বেতন দেড় থেকে দুই হাজার মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি টাকায় যা ১ লাখ ৮২ হাজার ৬১৬ থেকে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৮৮ টাকা। দেশের জীবনমানের তুলনায় উচ্চ বেতনের এই চাকরির কথা বলে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো হয় সৌদি আরবে। সেখানে কিছুদিন রাখার পর পাঠানো হয় রাশিয়ায়। এরপর তথ্য গোপন করে সই করানো হয় এক চুক্তিপত্রে, যা লেখা রুশ ভাষায়। আর এটিই হলো রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামার চুক্তি। যে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরের পর বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় যাওয়া যুবকদের নেওয়া হয় ‘সেনা’ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে। স্বল্প সময়ের প্রশিক্ষণ শেষে তাদের পাঠানো হয় যুদ্ধের ময়দানে।

বিরূপ আবহাওয়া ও বিপদসংকুল যুদ্ধক্ষেত্রে ভারী অস্ত্র নিয়ে লড়াইয়ে নামতে হচ্ছে তাদের। বাংলাদেশ, সৌদি আরব ও রাশিয়ার নাগরিকদের নিয়ে গড়ে ওঠা ত্রিদেশীয় একটি চক্র মিথ্যা আশ্বাসে প্রাণঘাতী এই যুদ্ধে ঠেলে দিচ্ছে বাংলাদেশিদের। রাশিয়ার পক্ষে সামনের সারিতে থেকে লড়াই করতে গিয়ে অঙ্গহানির পাশাপাশি বেঘোরে প্রাণও হারাচ্ছেন যুদ্ধরত বাংলাদেশিরা।

রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে থাকা বাংলাদেশিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত একটি এজেন্সির মাধ্যমে যাওয়া অন্তত চারজন রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। তারা হলেন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার সোহান মিয়া, ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ইয়াসিন মিয়া শেখ, নাটোরের সিংড়ার হুমায়ুন কবির ও তার বোনের স্বামী রহমত আলী।

যুদ্ধক্ষেত্রে মাইন বিস্ফোরণে পায়ে আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হওয়ার পর দেশে ফিরেছেন একজন। আরেকজন বিশ্রামের সময় কৌশলে পালিয়ে দেশে ফিরেছেন। বাকি যেসব বাংলাদেশি যুদ্ধের ময়দানে আছেন, তারাও ফিরতে চান দেশে। তবে ঠিক কতজন বাংলাদেশি এই মুহূর্তে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছেন, সে তথ্য নেই বাংলাদেশ সরকারের কাছে। কারণ হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, যারা বৈধভাবে কাজ বা পড়াশোনার জন্য রাশিয়ায় গিয়েছেন তাদের একটা পরিসংখ্যান রয়েছে, যা সংখ্যায় প্রায় ৫ হাজার। ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে রাশিয়া গিয়েছেন প্রায় ৩ হাজার আর স্টুডেন্ট ভিসায় আছেন ২ হাজারের মতো। তবে যারা ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব গিয়ে সেখান থেকে ট্রাভেল ভিসায় রাশিয়া গিয়েছেন, তাদের কোনো পরিসংখ্যান বাংলাদেশ সরকারের কাছে নেই।

চলতি বছরের শুরুতে নরসিংদীর আকরাম হোসেন নামে একজন রাশিয়া থেকে পালিয়ে দেশে আসার পর একটি ট্রাভেল এজেন্সির নাম সামনে আসে। ‘ড্রিম হোম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেড’ নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি বনানীতে অফিস খুলে রাশিয়ায় উচ্চ বেতনে চাকরি দেওয়ার নামে লোক পাঠাত যুদ্ধক্ষেত্রে। আর এই কাজে ট্রাভেল এজেন্সির বাইরে সৌদি আরব ও রাশিয়ার কয়েকটি গ্রুপ জড়িত।

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দেশে ফিরে আসা অন্তত দুজন বাংলাদেশির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা গিয়েছিলেন ড্রিম হোম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেডের মাধ্যমে। একসঙ্গে গিয়েছিলেন ১০ জন। পরে যাওয়ার কথা ছিল আরও ১০ জনের। তবে তারা কেউই জানতেন না যে, তাদের রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য নেওয়া হচ্ছে। যেখানে প্রতি মুহূর্তে আছে প্রাণ হারানোর শঙ্কা।

ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার সরকার বিদেশিদের তাদের হয়ে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেয়। আর এর বিনিময়ে বাংলাদেশি মুদ্রায় এককালীন ৩০ লাখ টাকা অগ্রিম এবং বেতন হিসেবে মাসে প্রায় ২ লাখ টাকার লোভনীয় প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ ছাড়া যুদ্ধ শেষে পরিবারসহ রাশিয়ায় নাগরিকত্ব নেওয়ার সুযোগের কথাও জানানো হয়। যুদ্ধ শেষের আগে কেউ আহত হলে বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং মারা গেলে পরিবার পাবে অন্তত ৪৫ লাখ টাকা।

তবে এসব তথ্য গোপন রেখেই প্রতারণার ফাঁদ পাতে ট্রাভেল ও রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। রাশিয়ার যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফেরত আসা নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বাসিন্দা আকরাম জানান, ২০১৯ সালে কাজের সন্ধানে গিয়েছিলেন সাইপ্রাস। সে সময় বিমানের টিকিট কিনেছিলেন ‘ড্রিম হোম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেড’ থেকে। এক বছর সাইপ্রাসে থেকে তেমন সুবিধা করতে না পেরে দেশে ফিরে আসেন। এর পর থেকে অন্য কোনো দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

গত বছরের শুরুতে ফের সাইপ্রাস যাওয়ার চেষ্টা শুরু করেন আকরাম। তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘সাইপ্রাস যাওয়ার জন্য ড্রিম ট্রাভেল এজেন্সিকে কিছু টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু ছয় মাসেও তার কোনো ব্যবস্থা না হওয়ায় টাকা ফেরত চাই। কিন্তু টাকা ফেরত না দিয়ে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে আমাকে রাশিয়া যাওয়ার প্রস্তাব দেয় ড্রিম ট্রাভেল এজেন্সি। তারা জানায়, সেনা ক্যাম্পে কাজ। মাসে দেড় থেকে দুই হাজার ডলার বেতন। আর যাওয়ার জন্য এজেন্সিকে দিতে হবে ৮ লাখ টাকা।’

কিছুদিন চিন্তাভাবনা করে এজেন্সির প্রস্তাবে রাজি হন আকরাম। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ড্রিম ট্রাভেল এজেন্সির মালিক দুজন। একজনের নাম আবুল হোসেন এবং আরেক জনের নাম জেরিন। জেরিনের বাড়িও নরসিংদী। জেরিন আমাকে জানায়, তার ছোট ভাইও আমাদের সঙ্গে রাশিয়া যাবে। এজেন্সি মালিকের ছোট ভাইও আমাদের সঙ্গে যাবে, আবার তাদের বাড়িও একই এলাকায়। যে কারণে রাজি হয়ে যাই।’

আকরাম জানান, তারা একসঙ্গে ১০ জন গিয়েছিলেন। তাদের অক্টোবর মাসে ওমরাহ ভিসায় নেওয়া হয় সৌদি আরব। সেখানে দুই মাস রাখার পর ডিসেম্বরের ২২ তারিখ পাঠানো হয় রাশিয়ায়। সেখানেও চক্রটির লোক ছিল। তারা রিসিভ করে প্রথমে রাখে হোটেলে, তারপর সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে যায়। এরপর ট্রেনিং ও অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধে পাঠায়।

চোখের সামনে সহযোদ্ধাদের মৃত্যু: ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ময়দানের ভয়াবহতার চিত্র তুলে ধরেন প্রতারণার শিকার আরেক বাংলাদেশি। যশোরের জাফর আলী বর্তমানে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছেন ইউক্রেন সীমান্তে। তিনি জানান, দুটি আলাদা জায়গায় তাদের ২২ দিনের প্রশিক্ষণ চলে। এরপর পাঠানো হয় যুদ্ধের ময়দানে।

এক ভিডিও বার্তায় জাফর বলেন, ‘ট্রেনিং শেষে আমাদের ক্যান্টনমেন্টে না নিয়ে ইউক্রেনের দিকে নিয়ে যায়। সেখানে একটা বাড়িতে রাখে। এই বাড়ি থেকে আমাদের বন্দুক, গুলি, গ্রেনেড দিয়ে বলছে ‘যুদ্ধে যাও’। আমরা যাব না বললে মারধর করছে। গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যুদ্ধে পাঠাচ্ছে। আমাদের বন্দুক, গুলি ও গ্রেনেড দিয়েছে।’

যুদ্ধক্ষেত্রের ভয়াবহতার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের তিনজন করে একেকটি টিম বানিয়ে দেয়। এর মধ্যে একজন কমান্ডার, বাকিরা তার অধীন। এক রাতে আমাদের ওপর বোমা পড়ে। কমান্ডার বোমার আঘাতে উড়ে যায়। আমিও পায়ে আঘাত পাই। কেন আঘাত পেয়ে ফেরত আসছি, সেজন্য মারধর করে। প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে এক রুমে ফেলে রাখে। দুদিন পর পায়ে আঘাত দেখেও নতুন টিমে দেয়। এরপর ১২ দিন যুদ্ধ করেছি।’

চোখের সামনে সহযোদ্ধাদের মৃত্যু দেখেছেন জাফর। নিজেও বোমার আঘাতে আহত হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কত মানুষ মরতাছে। আমার সঙ্গের ভাই মরছে। লাশটাও আনা যায় নাই।’

প্রাণ নিয়ে দেশে ফেরার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আকুতি জানিয়ে জাফর বলেন, ‘আমাদের বাঁচান। আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে, আমাদের বিক্রি করে দিয়েছে। আমরা তো এত কিছু বুঝি না। বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ, আমাদেরকে বাঁচান।’

এককালীন টাকাও লুটে নিয়েছে প্রতারকরা: রাশিয়া সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, যারা দেশটির হয়ে যুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন তাদের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এককালীন ২০ লাখ রুবল, যা বাংলাদেশি মুদ্রার হিসাবে প্রায় ৩০ লাখ টাকা। তবে এই টাকাও পাননি অনেক বাংলাদেশি। ট্রাভেল এজেন্সিগুলো সেই টাকা নিজেরা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

রাশিয়ার যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দেশে ফেরা আকরাম বলেন, ‘ওই টাকা দেওয়া হয় রাশিয়ার স্থানীয় ব্যাংকের মাধ্যমে। কিন্তু রাশিয়ায় থাকা প্রতারক চক্রের সদস্য সেই টাকা তুলে নেয়। প্রতারকরা আমাদের বলে, ‘টাকাটা তোমাদের না, এটা রাশিয়ান সরকার আমাদের (ট্রাভেল এজেন্সিকে) দিয়েছে।’ প্রতি মাসে বেতন হিসেবে যে টাকাটা পাবে, তোমরা যোদ্ধারা তা ভোগ করতে পারবে।’

আকরাম জানান, রাশিয়ার স্থানীয় ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার পর দুটি কার্ড দেওয়া হয়। যার একটি থাকত অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের কাছে, অন্য কার্ডটি কৌশলে নিয়ে নিত প্রতারকরা। এরপর অ্যাকাউন্টে এককালীন হিসেবে দেওয়া টাকা জমা হওয়ার পর তারা তা তুলে নেয়। তবে সবার টাকা তুলতে পারেনি প্রতারকরা। যুদ্ধের ময়দানে বাংলাদেশিরা যাওয়ার পর ভারতীয়, নেপালী ও অন্যান্য দেশ থেকে আসা যোদ্ধাদের সঙ্গে তাদের কথা হয়। তখন তারা জানতে পারেন, এককালীন ওই টাকা এজেন্সির জন্য নয়, যোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ।

জড়িত ১২ ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেল এজেন্সি: রাশিয়ায় গিয়ে যুদ্ধে আহত হওয়া মো. আমিনুলের স্ত্রী ঝুমু আক্তার চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বনানী থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে একটি মামলা করেন। যাতে ড্রিম হোম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম এম আবুল হাসান এবং তার ব্যবসায়িক অংশীদার ফারিহা জেরিন তামান্নাসহ চারজনকে আসামি করা হয়। এই মামলার পরপর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ শাখা টিএইচবির (মানব পাচার ও সংশ্লিষ্ট অপরাধের তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত) একটি টিম রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফারিহা জেরিন তামান্নাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। একই মামলায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত রাশিয়ান নাগরিক মুহাম্মদ আলমগীর হোছাইনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তিনিও দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে রাশিয়ায় যাদের পাঠানো হতো, তাদের দেশটির সেনাবাহিনীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করতো এই আলমগীর। এর বিনিময়ে ড্রিম ট্রাভেল এজেন্সি থেকে পেতেন নির্দিষ্ট হারে কমিশন, একইভাবে রাশিয়ান সেনাবাহিনী থেকেও কমিশন পেতেন আলমগীর।

সিআইডির টিএইচবি শাখার অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ‘রাশিয়ায় উচ্চ বেতনে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে যুদ্ধে পাঠানোর সঙ্গে জড়িত ১০-১২টি ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেল এজেন্সির নাম পাওয়া গেছে। যারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানব পাচার করছে।’

এরই মধ্যে রাশিয়ায় যুদ্ধ করতে যাওয়া অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছেন জানিয়ে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তাদের অভিযোগগুলো আমরা শুনছি এবং সে অনুযায়ী জড়িতদের শনাক্তে কাজ করছি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল—এমন বেশ কয়েকজন এরই মধ্যে যুদ্ধের ময়দানে প্রাণ হারিয়েছেন। যারা বেঁচে আছেন, তারা দেশে ফিরে আসতে চাচ্ছেন।’

বনানী থানার মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও জবানবন্দিতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানান মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘একটি সংঘবদ্ধ চক্র তিন দেশে বসে মানব পাচারের এই কাজটি করছে। বাংলাদেশ, সৌদি আরব ও রাশিয়ার নাগরিকরা এই চক্রে জড়িত। তাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি অনুবিভাগের মহাপরিচালক কালবেলাকে বলেন, ‘যারা প্রতারিত হয়ে রাশিয়ায় গিয়েছেন, যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন, তাদের ফেরানোর ব্যাপারে সরকার এখনো কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। আমাদের কাছে সে ধরনের কোনো তথ্য নেই। তবে ভুক্তভোগীরা রাশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস বা সংশ্লিষ্ট কনস্যুলেটগুলোতে যোগাযোগ করতে পারেন। তারা ভুক্তভোগীদের সহযোগিতা করতে পারবে।’

নিরাপদ অভিবাসনে সহায়তা এবং বিদেশে ফেরত অভিবাসীদের আর্থসামাজিকভাবে পুনর্বাসনে কাজ করে থাকে ব্র্যাক। এই বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাটির সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল হাসান কালবেলাকে বলেন, ‘প্রলোভনে পড়ে বাংলাদেশিরা রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে মারা যাচ্ছেন, আহত হচ্ছেন; এটা দুঃখজনক। সরকারের উচিত হবে রাশিয়ায় কতজন যুদ্ধ করতে গিয়েছেন, কোথায় কতজন আছেন, সেগুলোর ডাটাবেজ করা। তাদের কীভাবে ফেরত আনা যায়, সেই চেষ্টা করা।’