Image description
 

B-2 স্পিরিট — এটি এমন একটি বোমারু বিমান যা আজও সামরিক বিমান প্রযুক্তিতে অনন্য। আমেরিকার এই স্টেলথ বোমারটি অত্যন্ত দক্ষ হলেও, আজ পর্যন্ত বিশ্বের আর কোনো দেশ এটি ব্যবহার করছে না। কেন? এর পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ — প্রযুক্তিগত, অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত।

 

১. গোপন স্টেলথ প্রযুক্তি

B-2 বোমার সবচেয়ে বড় সম্পদ এর স্টেলথ বা রাডার-এড়ানো ক্ষমতা। এই প্রযুক্তি এতটাই গোপনীয় যে, আমেরিকা অন্য কোনো দেশের সঙ্গে এটি ভাগ করতে চায় না। কারণ, প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়লে B-2-এর নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা হুমকির মুখে পড়তে পারে।

 

২. অত্যন্ত ব্যয়বহুল

 

প্রতিটি B-2 তৈরি করতে খরচ হয়েছে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি। শুধু তৈরি নয়, এর রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচালনার খরচও আকাশছোঁয়া, যা অধিকাংশ দেশের পক্ষেই বহন করা সম্ভব নয়।

৩. সীমিত সংখ্যক উত্পাদন

মাত্র ২১টি B-2 বোমারু বিমান তৈরি হয়েছিল। এত অল্প সংখ্যায় তৈরি হওয়ায় আমেরিকা এসব বিমান শুধুমাত্র নিজের কৌশলগত প্রয়োজনেই সংরক্ষণ করেছে এবং কখনোই অন্য দেশে রপ্তানির কথা ভাবেনি।

৪. আমেরিকার প্রতিরক্ষা কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

B-2 বোমার আমেরিকার পরমাণু প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং বিশ্বব্যাপী তাৎক্ষণিক হামলা চালানোর সক্ষমতার অন্যতম মূল উপাদান। অন্য কোনো দেশে এটি দিলে আমেরিকার কৌশলগত আধিপত্য দুর্বল হতে পারে।

৫. রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা

আমেরিকার কঠোর রপ্তানি আইন অনুযায়ী, এমন উন্নত সামরিক প্রযুক্তি অন্য দেশে পাঠানো নিষিদ্ধ। এমনকি ঘনিষ্ঠ মিত্র ব্রিটেনও B-2 কেনার সুযোগ পায়নি।

৬. বিশেষ অবকাঠামোর প্রয়োজন

B-2 পরিচালনার জন্য দরকার বিশেষ ধরণের ঘাঁটি, হ্যাঙ্গার এবং রক্ষণাবেক্ষণ সুবিধা — যা স্থাপন করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং জটিল। বেশিরভাগ দেশের পক্ষেই এ ধরনের পরিকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব নয়।

৭. উদীয়মান বিকল্প

বর্তমানে অনেক দেশ নিজস্ব স্টেলথ বোমার তৈরির দিকে ঝুঁকছে। যেমন, চীন তৈরি করছে H-20 এবং রাশিয়া কাজ করছে PAK DA প্রকল্পে। ফলে তারা আর আমেরিকার B-2-এর দিকে তাকিয়ে নেই।

সংক্ষেপে বলা যায়, B-2 শুধু একটি বিমান নয় — এটি আমেরিকার প্রতিরক্ষা এবং প্রযুক্তির প্রতীক। এবং এই প্রতীককে অন্য কারোর হাতে তুলে দেওয়ার কথা আমেরিকার চিন্তাতেই নেই।