
যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে বা কাজের জন্য যেতে হলে এখন থেকে নতুন এক ধরনের যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। মার্কিন অভিবাসন দপ্তরের কর্মকর্তারা যদি কোনো আবেদনকারীকে ‘আমেরিকা-বিরোধী'মনে করেন, তাহলে তার ভিসা মিলবে না।
বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
গতকাল এ বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। যেসব বিষয় নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তার মধ্যে ওয়ার্ক বা ইমিগ্রেশন ভিসা পেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কার্যক্রমও অন্যতম।
নতুন এই নীতির আওতায় অভিবাসন কর্মকর্তারা এখন থেকে আবেদনকারীদের 'আমেরিকা-বিরোধী বা সন্ত্রাসী সংগঠনের' সঙ্গে কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা আছে কী না, তা পরীক্ষা করবেন। এ ছাড়াও, আবেদনকারীদের 'ইহুদিবিদ্বেষী' কোনো কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার নজির আছে কী না, তাও যাচাই করবেন কর্মকর্তারা।
মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন সেবা সংস্থার (ইউএসসিআইএস) হালনাগাদ নীতিমালায় এসব কথা বলা হয়েছে। ইউএসসিআইএসের মুখপাত্র ম্যাথু ট্রাগেসার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘যারা আমেরিকাকে ঘৃণা করে ও আমেরিকা-বিরোধী মূল্যবোধের প্রচার করে, তাদেরকে আমেরিকার কোনো সুফল ভোগ করতে দেওয়া উচিত নয়।’
তবে এই হালনাগাদ নীতিমালায় ‘আমেরিকা-বিরোধী’ মনোভাবের সুনির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র বলা হয়েছে, যারা ইহুদিবিদ্বেষী সন্ত্রাস, ইহুদিবিদ্বেষী সন্ত্রাস ও এর সঙ্গে জড়িত সংগঠন এবং ইহুদিবিদ্বেষী মূল্যবোধ ধারণ করেন, তারাও ‘আমেরিকা-বিরোধী’ বলে বিবেচিত হবেন। এই অস্পষ্ট নীতির কারণে ইন্টারনেটে ব্যাপক বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনলাইন ফোরামগুলোয় এ নিয়ে বিবাদ চলতে থাকে।
বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবীরা এই নীতির ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মার্কিন অভিবাসন কাউন্সিলের জ্যেষ্ঠ ফেলো অ্যারন রেইখলিন-মেলনিক তার এক্স পোস্টে এই উদ্যোগকে ‘ম্যাককার্থিইজম’ এর সঙ্গে তুলনা করে বলেন, এই শব্দটি (আমেরিকা-বিরোধী) এর আগে কখনো অভিবাসন আইনে যুক্ত করা হয়নি এবং এর সংজ্ঞা পুরোপুরি ট্রাম্প প্রশাসনের মস্তিষ্কপ্রসূত।
ব্রিগহ্যাম ইয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক লিলি লোপেজ সংবাদ সংস্থা এপিকে বলেন, আমার কাছে বড় খবর এটাই, যে তারা সূক্ষ্ম পক্ষপাত ও একপাক্ষিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দরজা খুলে দিচ্ছে। এতে তারা (অভিবাসন আবেদনের ক্ষেত্রে) নিজেদের সুবিধামতো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এটা খুবই উদ্বেগজনক। তার মতে, একজন আবেদনকারীকে ‘আমেরিকা-বিরোধী’ নন এমন প্রমাণ দিতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে।