Image description

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল মিরফা’ এলাকায় ঘটেছে এক হৃদয়ছোঁয়া ঘটনা। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে পক্ষাঘাতে (প্যারালাইসিস) আক্রান্ত এক ব্যক্তি চিকিৎসা নয়, বরং স্ত্রীর ভালোবাসা আর উদ্ভাবিত এক ব্যতিক্রমী থেরাপিতেই ফিরে পেয়েছেন হাঁটার ক্ষমতা।

খালিজ টাইমস–এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সাত বছর আগে একটি স্ট্রোকের শিকার হন আবুধাবির আল মিরফার বাসিন্দা খালিল আল হোসানি। এতে মাথা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত তার পুরো শরীর অচল হয়ে যায়। ডাক্তাররা জানান, খালিলের সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে দীর্ঘ পাঁচ বছর তিনি বিছানাতেই বন্দি জীবন কাটান।

তবে হাল ছাড়েননি তার স্ত্রী ফাতিমা। তিনি ঠিক করেন, নিজের মতো করেই স্বামীর সেবা করবেন।

সমুদ্রসৈকতে ব্যতিক্রমী থেরাপি

ফাতিমা জানান, হাসপাতালের দীর্ঘ চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় তেমন অগ্রগতি না দেখে তিনি স্বামীকে বাড়ি নিয়ে আসেন। এরপর প্রতিদিন খালিলকে আল মিরফার সমুদ্রসৈকতে নিয়ে যেতে থাকেন। সেখানে তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা খালিলকে বালুর নিচে চাপা দিয়ে রাখতেন এবং সমুদ্রের পানি দিয়ে পেশিতে হালকা ম্যাসাজ করতেন।

এই ‘অদ্ভুত’ পদ্ধতি কয়েক মাস ধরে চালানোর পর এক বিস্ময়কর ফল পাওয়া যায়—খালিল আবার দাঁড়াতে শুরু করেন। পরে ধীরে ধীরে হাঁটতে, এমনকি দৌড়াতেও সক্ষম হন তিনি।

ফাতিমা বলেন, “যেন একটি শিশু নতুন করে হাঁটতে শেখে, আমি সেই দৃশ্য প্রতিদিন উপভোগ করতাম। ওর চোখে আশার আলো দেখতে পেয়েছিলাম।”

দাম্পত্য ভালোবাসার অনন্য উদাহরণ

বর্তমানে এই দম্পতি মাঝেমধ্যে বাইরে ঘুরতেও যান। তবে নিরাপত্তার জন্য হুইলচেয়ার সঙ্গে রাখেন, যাতে হঠাৎ কোনো সমস্যা হলে কাজে লাগে।

এই ঘটনাটি শুধু চিকিৎসার গণ্ডিকেই সীমাবদ্ধ নয়—এটি প্রমাণ করে, ভালোবাসা, ধৈর্য আর অটুট বিশ্বাস অনেক সময় সেই জায়গা থেকেও জীবন ফিরিয়ে আনতে পারে, যেখানে চিকিৎসা থেমে যায়।

ইত্তেফাক/