
আফগানিস্তানের তালেবান কর্তৃপক্ষ শুক্রবার চতুর্থ বার্ষিকী উদযাপন করেছে। দিবসটি ঘিরে ব্যাপক আয়োজন করে ক্ষমতাসীন গোষ্টিটি । রাজধানী কাবুলের কেন্দ্রীয় অংশসহ একাধিক শহরে শোভাযাত্রার পরিকল্পনা করা হয়। হেলিকপ্টার থেকে ফুল ছিটিয়ে দেওয়া ও তালেবানের ‘ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তানের’ সাদা-কালো পতাকা ওড়ানোর মাধ্যমে ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট রাজধানী দখলের দিনটি স্মরণ করা হয়। খবর এএফপি
তালেবান সদস্যরা বৃহস্পতিবার রাতে তাদের ২০ বছরের বিদ্রোহী লড়াইয়ের প্রধান প্রতিপক্ষের কেন্দ্র; বন্ধ হয়ে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কাছে পতাকা উড়িয়ে ও আতশবাজি জালিয়ে সমবেত হন বলে এএফপির এক সাংবাদিক জানিয়েছেন। তবে গত বছর যেই বাগরাম বিমানঘাঁটিতে ব্যাপক আয়োজনের মাধ্যমে সামরিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হলেও, তা এ বছর কোনো প্রকাশ্য ব্যাখ্যা ছাড়াই বাতিল করা হয়েছে।
তাদের কঠোর ইসলামি আইন প্রয়োগের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, বিশেষত নারীদের ওপর আরোপিত সীমাবদ্ধতার কারণে তালেবান সরকার এখনো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মূলত বিচ্ছিন্ন। তবে রাশিয়ার কাছ থেকে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাওয়ায় তারা আশাবাদী, অন্যান্য দেশও একই পথে এগোবে।
আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না পেলেও কাবুলের সঙ্গে মধ্য এশিয়ার দেশগুলো, চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি দেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। পশ্চিমা অঙ্গনে তালেবান সরকার জানিয়েছে, তারা কাবুলে নরওয়ে, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ আরো কয়েকটি দেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গত জুলাইয়ে নারীদের ও কন্যাশিশুদের ওপর নির্যাতনের দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে দুইজন শীর্ষ তালেবান নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। আফগান নারীদের অধিকাংশ শিক্ষা ও চাকরি, পাশাপাশি পার্ক, জিম ও পুরুষ অভিভাবক ছাড়া ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
দেশের ভেতরে কার্যত কোনো সংগঠিত বিরোধিতা না থাকলেও অর্থনৈতিক দুর্বলতা, আন্তর্জাতিক সহায়তা কমে যাওয়া ও প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বহিষ্কৃত প্রায় ৪০ লাখ আফগান শরণার্থীর আগমন—বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ কর্তৃক নিযুক্ত স্বাধীন বিশেষজ্ঞরা বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছেন, তালেবান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক না করতে এবং তাদের ‘সহিংস ও কর্তৃত্ববাদী শাসন’ প্রত্যাখ্যান করতে।
এক বিবৃতিতে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘বৈধতা ছাড়া পরিচালিত তালেবান লিঙ্গভিত্তিক নিপীড়নকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে, বিরোধিতা দমন করে, প্রতিশোধ গ্রহণের মাধ্যমে, স্বাধীন গণমাধ্যমকে স্তব্ধ করে—মানবাধিকার, সমতা ও বৈষম্যহীনতার প্রতি প্রকাশ্য অবজ্ঞা প্রদর্শন করছে।