Image description
 

ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি জাতিসংঘকে জানিয়েছে, চলতি আগস্টের শেষ নাগাদ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কূটনৈতিক সমাধান না হলে তারা জাতিসংঘের অনুমোদিত নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে প্রস্তুত। এএফপির পাওয়া একটি যৌথ চিঠিতে এ তথ্য উঠে এসেছে।

 

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও নিরাপত্তা পরিষদের উদ্দেশে পাঠানো ওই চিঠিতে তিন ইউরোপীয় শক্তি জানিয়েছে, তারা ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখতে সব ধরনের কূটনৈতিক উপায় ব্যবহার করবে, যদি না তেহরান নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সমঝোতায় পৌঁছায়।

 

 

ই৩ নামে পরিচিত এই তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সতর্ক করেছেন, প্রয়োজনে তারা ‘স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম’ প্রয়োগ করবেন—যা ২০১৫ সালের আন্তর্জাতিক চুক্তির অংশ ছিল। ওই চুক্তির আওতায় ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছিল এবং যে কোনো পক্ষের অনুরোধে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের সুযোগ রাখা হয়েছিল। অক্টোবর মাসে চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে।

ফ্রান্সের জ্যাঁ-নোয়েল বারো, ব্রিটেনের ডেভিড ল্যামি এবং জার্মানির ইয়োহান ভাডেফুল স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘আগস্ট ২০২৫-এর শেষের আগে ইরান যদি কূটনৈতিক সমাধানে রাজি না হয়, অথবা মেয়াদ বাড়ানোর সুযোগ কাজে না লাগায়, তাহলে আমরা স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম চালু করতে প্রস্তুত।’

২০১৫ সালের যৌথ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়ার পাশাপাশি এই তিন ইউরোপীয় দেশও স্বাক্ষর করেছিল। চুক্তির অধীনে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কমানোর বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছিল।

তবে ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে চুক্তি থেকে সরিয়ে নিয়ে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। ইউরোপীয় দেশগুলো তখনও চুক্তিতে থেকে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু তাদের সাম্প্রতিক চিঠিতে বলা হয়েছে, ইরান চুক্তির শর্ত ভেঙে অনুমোদিত মাত্রার তুলনায় ৪০ গুণ বেশি ইউরেনিয়াম মজুত করেছে।

 

 

 

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘ই৩ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সৃষ্ট সংকটের কূটনৈতিক সমাধানে সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে আগস্টের শেষ নাগাদ সন্তোষজনক সমাধান না এলে আমরা চুক্তি লঙ্ঘনের আনুষ্ঠানিক নোটিশ দিয়ে স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম সক্রিয় করব।’

এর আগে জুন মাসে ইসরাইল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ১২ দিনের হামলা চালায়, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রও নিজস্ব বোমাবর্ষণ অভিযানে অংশ নেয়। আক্রমণের পর ইরান আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা স্থগিত করে। যদিও সংস্থাটির উপপ্রধানকে নতুন সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য তেহরানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

গত মাসে জাতিসংঘে পাঠানো এক চিঠিতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি দাবি করেন, ইউরোপীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের কোনো আইনি অধিকার নেই। ইউরোপীয় মন্ত্রীরা এই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।