Image description

গাজা, লেবানন ও ইয়েমেনের পাশাপাশি ইরানের সঙ্গেও যুদ্ধে জড়ায় ইসলাইল। এ কারণে দেশটির নাগরিকদের মাঝে চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যুদ্ধে জড়ানোর কারণে দেশটির ৫০ শতাংশ মানুষের ঘুম হারাম হয়ে গেছে বলে এক জরিপে ফল প্রকাশ করা হয়েছে।

 

মঙ্গলবার ইসরাইলি গণমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টে বলা হয়েছে, মাক্কাবি হেলথকেয়ার সার্ভিসেস নামের এক প্রতিষ্ঠানের নতুন জরিপে জানা গেছে—এসব যুদ্ধ-সংঘাত ইসরাইলিদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার ওপর চরম নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

 

জরিপের ফলে দেখা যায়, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫০ শতাংশ জানান, তারা প্রয়োজন মতো ঘুমাতে পারছেন না। গত ফেব্রুয়ারিতে সংখ্যাটি ছিল ৩৩ শতাংশ। সপ্তাহে অন্তত দুই রাত অনিদ্রায় ভোগেন ৫০ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে তা ছিল ৩৭ শতাংশ। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১৬ শতাংশ জানান, তারা ভয়ঙ্কর অবসাদে ভুগছেন। প্রতিদিন কাজকর্ম সঠিকভাবে পালনের জন্য যতটুকু শারীরিক-মানসিক শক্তি দরকার তা পাচ্ছেন না ৫০ শতাংশ মানুষ।

ইরান-যুদ্ধের পর দৈনিক কাজের রুটিনে ফিরতে ২৪ শতাংশের অনেক কষ্ট হয়েছে। ‘মাঝারি’ মানের কষ্ট হয়েছে ৩১ শতাংশের। শারীরিক-মানসিক অসুস্থতার লক্ষণের মধ্যে ছিল উদ্বেগ, আতঙ্ক ও আশঙ্কা (৩৫ শতাংশ), অবসাদ ও শক্তির অভাব (২২ শতাংশ) ও ঘুমের ব্যাঘাত (১৮ শতাংশ)। ধূমপায়ীদের মধ্যে ৬৩ শতাংশ বলেছেন, যুদ্ধ চলাকালে তাদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা বেড়েছে।

গত ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া ইসরাইলে ১২ দিনের ‘রাইজিং লায়ন’ যুদ্ধ শেষ হওয়ার এক মাস পর এক হাজারেরও বেশি রোগীর ওপর জরিপ চালায় সংগঠনটি।

জরিপে ঘুম না হওয়া, শারীরিক দুর্বলতা, আতঙ্ক, উদ্বেগ, অবসাদ ও শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির মতো বিষয়গুলো উঠে এসেছে।

জরিপে সব ধরনের মানুষের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত এক হাজার ১০০ ইসরাইলিকে বেছে নেওয়া হয়।

চিকিৎসা সেবা পেতে ইসরাইলি নাগরিকদের চারটি অলাভজনক স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রতিষ্ঠানের (এইচএমও) যেকোনো একটিতে নিবন্ধন করতে হয়। মাক্কাবিও এমন একটি প্রতিষ্ঠান।

জরিপে অংশ নেওয়া ২৫ শতাংশ বাবা-মা বলেছেন, তারা শিশুদের আচার-ব্যবহারে নেতিবাচক পরিবর্তন দেখছেন। আগের তুলনায় তাদের মেজাজ এখন আরো বেশি খিটখিটে। শিশুদের মধ্যে ধৈর্য কম থাকা, নিজেদের গুটিয়ে ফেলা ও অকারণে রূঢ় ব্যবহার দেখতে পেয়েছেন অভিভাবকরা।

সন্তানদের মানসিক স্বাস্থ্যের দৃশ্যমান অবনতি দেখছেন ২০ শতাংশ বাবা-মা।

মাক্কাবির ফলিত গবেষণা বিভাগের প্রধান নাআমা স্টাইন গণমাধ্যমকে বলেন, কেউ কেউ প্রতিদিনের কাজে ফিরলেও, তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। যুদ্ধ বন্ধ না হওয়ায় এমন হচ্ছে।

মাক্কাবির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. এরান রথম্যান বলেন, আমাদের তথ্য মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এই যুদ্ধের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের বিষয়টিকে সবার সামনে নিয়ে এসেছে। ঘুমের অভাব, বাড়তে থাকা অবসাদ এবং উদ্বেগ ও মন খারাপের অনুভূতি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার মতো ঘটনাগুলো সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে।